জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ । সবার ই কম বেশি পিকনিক সারা হয়ে উঠেছে। করনা আবহ এখন অনেকটা স্বাভাবিক। দুরপাল্লার ট্রেন বাসের গতিবিধি স্বাভাবিক বললেই চলে। অতঃপর তিন বন্ধু বেরিয়ে পড়লাম বীরভূমের মুন্দিরা গ্রামের উদ্দেশে।
কলকাতা ছেড়ে বেরোতেই এত দিনের ঘরবন্দি দশা ঘুচিয়ে যেন মুক্তির স্বাদ পাওয়া গেল! তবে অতিমারি-আবহে বেড়ানর অভ্যাসে খানিক পরিবর্তন অবশ্যই এসেছে। নিউ নর্মাল ভ্রমনে মাস্ক আর স্যানিটাইজার এখন সর্বক্ষনের সঙ্গী। তার সঙ্গে মিশে আছে সতর্কতা। তবে, এটুকু আপস না করে উপায় নেই। এটা আপনারাও মেনে চলছেন নিশ্চই।
শক্তিগর, পানাগড় পেরনোর পর থেকেই মোবাইলের জি পি এস পথপ্রদর্শকের ভুমিকায়। দার্জিলিং মোড় থেকে ডান দিকে বাঁক নিয়ে গাড়ি মোড়্গ্রাম-পানাগড় রাজ্য সড়ক ধরে ছুটে চলল। পরিকল্পনা ছিল ইলামবাজার হয়ে যাব। কিন্তু জিপি এসের নির্দেশ মেনে পথ একটু কাটছাঁট করতে, দোমড়া থেকে বাঁদিকে সরু রাস্তাটায় ঢুকে পড়লাম আমরা।
পথের দু'পাশে গ্রাম-জীবনের টুকরো টুকরো ছবি। সোনালি ধানখেত, দিঘির পাড়ে তালগাছের সারি, মাছরাঙার শিকারী ভঙ্গিমা, মাটির ঘরগুলোর পাশ দিয়ে আঁকাবাঁকা লাল মাটির পথ- দেখতে দেখতে পেরিয়ে এলাম সুন্দরিয়া কুলডিহা গ্রামগুলি। এরপর ডান দিকে বাঁক নিয়ে গাড়ি বড় রাস্তায় উঠে এল। মলানদিঘির পর থেকে অনেকটা পথ জুড়েই শালবন সঙ্গী। মাঝে মাঝে শেষবেলার শ্রীহীন কাশফুলও দৃশ্যমান। একে একে পেরিয়ে যেতে থাকলাম বিস্নুপুর, শিবপুর।
পূর্ত বিভাগের ঝকঝকে মসৃণ রাস্তাটা অজয় নদের কাছে এসে শেষ হয়ে গেল। অজয়ের চেহারা দেখে মন খারাপ হয়ে যায়। নদীর বুকে বিশাল বিশাল চড়া। তার মাঝে ঝোপঝাড়, কাশবন গজানোয় মনে হচ্ছে ছোট ছোট মাঠ। বর্ধমান জেলার এখানেই ইতি। নদী পেরোতেই ঢুকে পড়লাম বীরভূমে। এপারটা জয়দেব-কেদুলি।
দুপুর প্রায় একটা। মঙ্গলবার। নদীর পাড়ে ভাঙা হাটে তখনও বেচকেনা চলছে। মঙ্গল ও শনি, এই দুদিন এখানে হাটবার। পৌষমেলার নাম জয়দেব ঘাট। একটু এগোতেই একটা বড় ছাউনি, মুল বাজার। পাশ কাটিয়ে ভাঙা রাস্তা ধরে এগিয়ে চললাম মুন্দিরা গ্রামের দিকে।
এদিকটা বেশ কিছু আশ্রম আর আখড়া। নামগুলিও চমৎকার- সহজ-মানুষ, শ্যাম-সখা। মনেরমানুষ আখড়ার কাছে সাইকেল নিয়ে অপেক্ষা করছিল অনেমেষ নামে এক তরুন। আর জি পি এস নয়। অনিমেষকে অনুসরন করেই গাড়ি ধীর গতিতে এগিয়ে চলল। সোনাঝুরি জঙ্গলের পাশ দিয়ে পৌঁছে গেলাম বালিঘাট। তিন দিকে সোনাঝুরির ঘন অরন্য আর সামনে বয়ে চলা নদী, তারই মাঝে মুন্দিরা ব্যাকপ্যাকার্স ক্যাম্প। এটাই আমাদের দু'দিনের অস্থায়ী মোকাম।
আশেপাশে লোকবসতি নেই। মনোরম পরিবেশে কিছুক্ষনের জন্য মুখের মাস্ক খুলে তরতাজা অক্সিজেন নিতে তাই কোনও বাধা নেই। কয়েকটা পিলারের উপর খড়ের ঝাউনি আর তার নীচেই আমাদের ছোট্ট তাঁবু। মেঝেতে তোষক আর চাদর পাতা। ভিতরে ঢুকেই বসে পড়তে হবে, দাঁড়ানোর উপাই নেই।
ভাত, ডাল, উচ্ছে-আলু ভাজা, সালাড, ফুলকপির তরকারি আর রুই মাছ দিয়ে দুপুরের খাওয়া সেরে নদীর পাশ দিয়ে জয়দেব ঘাটের কাছে চলে এলাম। এখানে নদীতে জাল ফেলে মাছ ধরা চলেছে। অনিমেষ বলেছিল, ক্যাম্পের সামনে থেকেই খুব সুন্দর সূর্যাস্ত দেখা যায়। সে কথা মনে পড়তে ক্যাম্পে ফিরে চললাম।
নদীর বুকে দিনের শেষ রঙ ছড়িয়ে সুর্য মিলিয়ে যেতেই চারপাশ থেকে ঘন অন্ধকার চেপে ধরল। ক্যাম্পের আলো কেবল টিমটিম করে জ্বলছে। আর অনিমেষের ঘর থেকে ভেসে আসছে দোতারার সুর। ক্যাম্পের অতিথিদের দেখভালের দায়িত্ব তার, কাজের ফাকে দু'খন্ড সময়ে পেলেই সে দোতারা নিএ রেওয়াজে বসে পড়ে। সন্ধায় মুড়ি-বেগুনি দেওয়ার সময় জানিয়ে গেল, একটু পরেই বাউল শিল্পিরা গান শোনাতে আসবেন।
সন্ধে থেকেই হালকা শীত। গানের আসর মাতিয়ে দিলেন সাধু দাস, সোনা খ্যাপা। জয়দেব গ্রামেরই বাসিন্দা তাঁরা। সাধু দাস কলকাতায় ও ভিন রাজ্যে গিয়ে অনুষ্ঠান করেছেন। লকডাউনে শিল্পীদের রজগারপাতি কমে গিয়েছে বলে দুঃখ করলেন। তারপর দোতারায় সুর তুলে তাঁরা গাইলেন নীলকণ্ঠ গোঁসাই, নরহরি গোঁসাই, যাদুবিন্দু, কুবিরচাদ ও ভবা পাগলার গান, এমনকী রাগসংগীতও। সবশেষে দ্বিজভূশনের লেখা 'তোমায় হৃদমাঝারে রাখব' এবং লালন ফকিরের 'মিলন হবে কতদিনে'। সুরেলা শীতের সন্ধ্যায় গ্রাম থেকেও জনাকয়েক দর্শক-শ্রোতা এসেছেন।
অনুষ্ঠানের শেষে সবাই যে-যার বাড়ি চলে যাওয়ার পর চারপাশ নিঝুম হয়ে এল। রাত বাড়তে থাকল, পাল্লা দিয়ে প্রকট হল নির্জনতা। অনিমেষও ডাইনিং রুমে রুটি , চিকেন আর সালাড সজিয়ে বাড়ি যাওয়ার তোরজোড় শুরু করল। রাতে আমাদের পাহারায় থাকবে অন্য একজন গার্ড। নৈশভোজ সেরে তাবুর চেন টেনে দিলাম।
সকালে কিচিরমিচির শব্দে মুখরিত চতুর্দিক, ঘুম ভাঙল সেই শব্দে। এ-ডাল থেকে ও-ডালে উড়ে বেড়াচ্ছে মুনিয়া, ফিঙে, দোয়েল, ছাতারে, ঘুঘু, বাশপতি, কাঠঠোকরা। ক্যাম্পের পিছন দিকে উচু মাটির বাধটা ধরে হাটতে লাগলাম। গ্রামের মহিলারা জঙ্গলে কাঠ সংগ্রহ করতে এসেছে। রংবেরঙের প্রজাপতি উড়ছে। রাস্তার ধারে নামগোত্রহীন রুপবতী ফুল।
লুচি-তরকারি আর ডিমসেদ্ধ খেয়ে দশটা নাগাদ বেরিয়ে পড়লাম। শ্যাম-সখা আশ্রম, জয়দেব প্রকৃতি উদ্যান ছাড়িয়ে পিচের রাস্তা, দু'পাশে সোনালি আমন ধানের খেত। ছায়াঘন রাস্তা ধরে চলতে চলতে পেরিয়ে গেলাম সুগড়, আকম্বা। ৭ কিলোমিটার চলার পর নোহানা বাসস্ট্যান্ড মোড়। বাঁদিকে এক কিলোমিটার দূরে ঘুড়িশা-শ্রীপুর।
বর্ধিষ্ণু গ্রাম। বড় বড় দিঘি। হাইস্কুল্কে পাশ কাড়িয়ে পৌঁছে গেলাম লক্ষ্মী-জনার্দন মন্দিরের কাছে। ক্ষেত্রনাথ দত্ত প্রায় তিনশো বছর আগে এই মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তী কালে সংস্কার করেন শ্যামসুন্দর দাস। বর্তমানে শ্যামসুন্দর দাসের বংশধররা এই মন্দির তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে আছেন। লক্ষ্মী-জনার্দন ও গোপাল আরাধ্য দেবতা। নিত্যসেবা হয়। দোলের সময় বড় উৎসবও হয়।
এ মন্দিরের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ দেওয়াল গাত্রে টেরাকোটার অলংকরনে গনেশ, ত্রিপুরাসুন্দরী, মঙ্গলচন্ডী, সংকীর্তনরত শ্রীচইতন্য, রাম-সীতা, রাধা-কৃষ্ণ, মহিষাসুরমর্দিনী, মৎস্যকন্যা, ইউরোপীয় মহিলা প্রভৃতি।
মন্দির থেকে বেরিয়ে একটু এগিয়েই বড় রাস্তা। প্রায় ১৬ কিলোমিটার চলার পর বাম দিকে বাঁক নিয়ে ঢুকে পড়লাম দুবরাজপুর রোডে। রাজবাড়ির দিকে চলেছি। রাস্তার দু'ধারে দোকানপাট, বাড়িঘরের মধ্যে একটি টেরাকোটার পুরনো মন্দির দেখে নেমে পড়লাম চন্দ্রনাথ শিবমন্দির। গর্ভগৃহে শিবলিঙ্গের অধিষ্ঠান। অষ্টকোনা মন্দিরের গায়ে মাটির ফলকে খোদিত আছে গনেশজননী, জগদ্ধ্বত্রি, স্নানরতা রমণী এবং নানান পৌরাণিক ও সামাজিক ছবি। মহারাজা রামরঞ্জন চক্রবর্তীর পিতা, রাজা কৃষ্ণচন্দ্র ১৮৪৭ সালে এই মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেন।
হেতমপুর কৃষ্ণচন্দ্র কলেজ ছাড়িয়ে পৌঁছে গেলাম রাজবাড়ির কাছে। কিন্তু সুবিশাল তোরণের নীচ দিয়ে রাজবাড়ির দোরগোড়ায় পৌঁছে হতাশ হতে হল। প্রবেশদ্বারের পাশেই একটি পোস্টারে লেখা, প্রবেশ নিষেধ। কোনওভাবেই ভিতরে যাওয়ার অনুমতি পাওয়া গেল না। রাজমাতা পূর্ণিমা দেবী, রাজকন্যা অনুরাধা ও কুমারী বৈশাখী- রাজপরিবারের এই সদস্যরা এখনও এখানে বসবাস করেন।
রাজা রামরঞ্জনের নাম থেকেই রাজবাড়ির নাম রঞ্জক প্যালেস। দুর্গের আকারে নির্মিত প্রাসাদের কিছুটা অংশ জুড়ে এখন বি এড কলেজ আর ডি এ ভি পাবলিক স্কুল। হেতমপুর হাজারদুয়ারি রাজবাটি নামেও রঞ্জন প্যালেসের খ্যাতি আছে। তবে, হাজার নয়, তার থেকে এক কম, অর্থাৎ ৯৯৯টি দরজা আছে হেতমপুরের রঞ্জন প্যালেসে। মুর্শিদাবাদের হাজারদুয়ারি মর্যাদা রক্ষার্থেই নাকি এই ব্যাবস্থা।
দুবরাজপুর থানা মোড় হয়ে পৌঁছে গেলাম মামা-ভাগ্নে পাহাড়ে। ঢোকার মুখেই পাহাড়েশ্বর শিবমন্দির। দেখে বোঝাই যায় নতুন তৈরি মন্দির। গর্ভগৃহে বিশাল শিলাখন্ড। পাথরের স্তূপ আর গাছগাছালিতে ঘেরা পথ ধরে এগিয়ে চললাম। গ্রানাইট শিলাময় এলাকাটি ছোটনাগপুর মালভূমির অংশ। 'টব" ভূমিরূপের বৈশিষ্ট্য চোখে পড়ার মত। অনেকটা উপর ব্যালান্সিং রকের মত দড়িয়ে আছে। আবহবিকারের ফলে পাথর গুলির আয়ে লম্বাভাগে ফাটল ধরেছে।
বেশ মজার পৌরাণিক কাহিনও প্রচলিত আছে এই পাহাড় নিয়ে। লঙ্কা আক্রমনের লক্ষে রামচন্দ্র যখন সেতুবন্ধের সিদ্ধান্ত নেন, তখন আকাশপথে হিমালয় থেকে রথে চাপিয়ে পাথর আনা হচ্ছিল। সে সময় কিছু পাথর এখানে পড়ে যায় আর সৃষ্টি হয় এই পাহাড়।
কয়েক ধাপ সিড়ি ভেঙে উঠে গেলাম কিছুটা। পাশাপাশি দুটো পাথর, মামা ও ভাগ্নে। একটা কালীমন্দির আছে। উপর থেকে দেখা যায় বিস্তির্ন পাথুরে এলাকা আর জনবসতি। প্রজাপতিও পক্ষীপ্রেমীদের কাছে এ অঞ্চল অত্যন্ত লোভনীয়।
ফেরার পথে ক্যাম্পে ঢোকার আগে জয়দেব-কেদুলিতে রাধাবিনোদ মন্দির দেখে নিলাম ইটের মন্দিরগাত্রে খোদিত বিষ্ণুর দশ অবতার ও রামায়ণের কাহিনি। কথিত আছে, মন্দিরটি কবি জয়দেবের আবাসস্থলেই প্রতিষ্ঠিত। ১৬৮৩ খ্রিষ্টাব্দে বর্ধমানের মহারাজা কীর্তিচাঁদ বাহাদুর এই মন্দির নির্মান করেন।
এদিকে মুন্দিরা ক্যাম্পে দু'রাত কাটানো শেষ। তৃতীয় দিন ঘরের পথে রওনা হয়ে ঠিক করলাম ইছাই ঘোষের দেউল আর গড়জঙ্গল দেখে নেব। রাস্তাতেই পড়বে।
নদীর ওপরেই দেউল। নদী পেরিয়ে ঢুকে পড়লাম বর্ধমানে। বাঁদিকে বাঁক নিয়ে অজয়ের সমান্ত্রাল পথ ধরে ৫ কিলোমিটার চলার পর একটা ছোট সেতু পেরিয়ে জনপ্রিয় পিকনিক স্পট দেউল পার্ক। তার পরেই ইছাই ঘোষের দেউল।
আনুমানিক একাদশ শতকেনির্মিত এই মন্দিরের উপরিভাগের গঠন অনেকটা ওড়িশি ধাঁচের। প্রায় ৫০ ফুট উচু মন্দিরটির ইটের দেওয়ালের গায়ে রয়েছে সুন্দর কারুকার্য। ইছাই ঘোষ এই দেউলটি তৈরি করেছিলেন মাতা ভগবতীর উদ্দেশে।যদিও মন্দিরের অন্দরে রয়েছেশিবলিং।
ধর্মমঙ্গল কাব্যে ইছাই ঘোষের উল্লেখ আছে। ইছাই ঘোষ ছিলেন গৌড়রাজের একজন বিদ্রোহী সামন্ত। সমাজের দুরবল,শোষিত, তথাকথিত নিম্নবর্গীয় মানুষদের নিয়ে সেনাবিহিনী গড়ে তোলেন তিনি। গৌড়েশ্বরের আর-এক সামন্ত কর্নসেনের পুত্র লাউসেন ও ইছাই ঘোষের প্রবল যুদ্ধ হয় অজয় নদের পাড়ে। যুদ্ধে ইছাই ঘোষ পরাজিত ও নিহত হন এবং লাউসেন তার গড় ধ্বংস করে দেন।
দেউল পেরিয়ে ডান দিকেগ্রামের মধ্যে ঢুকলাম। গ্রাম ছাড়িয়ে গড়জঙ্গল। শান্ত, নির্জন জঙ্গলে শাল আর অর্জুনের আধিক্য। ভেসে আসছে পাহির কুজন। জঙ্গলের মধ্য দিয়ে চলে যাওয়া রাঙা মাটির পথের দু'ধারে উইয়ের ঢিবি।জালের বেড়ায় ঘেরা একটা জায়গায় হরিণ আর ময়ুরের দেখা মিলল।
জঙ্গলের মধ্যেও জি পি এস দিব্যি পথ দেখিয়ে নিয়ে চলেছে। ৬ কিলোমিটার চলার পর পৌঁছলাম মেধাসাশ্রম গড়চন্ডিধামে। পুরান অনুসারে, মেধা মুনি এই অরন্যে এক প্রাচীন তেঁতুল গাছের কোটরে তপস্যা করতেন। যুদ্ধে হেরে রাজা সুরথ ও দেউলিয়া ব্যবসায়ী সমাধি বৈশ্য নিরাপদেথাকার জন্য এই আশ্রমে আশ্রয় নীন। মেধা মুনির আদেশে রাজা সুরথ মেধাসাশ্রমে মাটির দুর্গামুর্তি গড়ে পূজা করেন। রাজার রাজ্যলাভ হয়। বাংলার মাটিতে সেই থেকে দুর্গাপুজো প্রচলিত হল। প্রাচীন সুবিশাল এক অশ্বত্থ গাছের কোটরে অষ্টভুজা সিংহবাহিনীর মন্দির। কাছেই সেই তেঁতুল গাছ, যেখানে মেধা মুনি তপস্যা করেছিলেন।
ফিরে চললাম। কিন্তু জি পি এস এখন আর কাজ করছে না। জঙ্গলের মধ্যে প্রতিটা চৌমাথা প্রায় একই রকম। পথ হারিয়ে জঙ্গলের মধ্যে দু'-এক পাক খেয়ে দেউলের কাছে পৌঁছে অবশেষে দুসচিন্তার অবসান হল। গ্রামের মধ্য দিয়ে ২১কিলোমিটার চলে হাইওয়েতে যখন উঠলাম, মাইলস্টোনে লেখা পানাগড় ১৮ কিলোমিটার। গাড়ি ছুটে চলল শহরের দিকে।
কিভাবে যাবেন
কলকাতা থেকে মুন্দিরার দুরত্ব ১৮৩ কিলোমিটার। সরাসরি গাড়িতে গেলে সময় লাগে সাড়ে ৪ থেকে ৫ঘন্টা। বাসে বা ট্রেনে ইলামবাজার, বোলপুর, দুর্গাপুর পৌঁছে সেখানে থেকেও ভাড়া গাড়িতে যাওয়া যায় মুন্দিরা। ইলামবাজার থেকে মুন্দিরার দুরত্ব ১৩ কিলমিটার, বোলপুর থেকে ৩০ কিলোমিটার। গাড়ি পাবেন এপথে। চাইলে বাসেও জয়দেব-কেদুলি চলে আস্তে পারেন। দুর্গাপুর থেকেও বাসে বা গাড়িতে সহজেই চলে আসা যায় মুন্দিরা।
0 মন্তব্যসমূহ