স্বর্ণমন্দির ও জালিয়নাওয়ালা বাগে বর্বোচিত হত্যার সাক্ষি দেখতে অমৃতসর আসুন ঃ-
গুরু রামদাস ছিলেন খালসা ধর্মের দশম গুরুর চতুর্থ গুরু। ১৯৩৪ সালের ৯ ই অক্টোবর রামদাস লাহোরের চুনা মান্ডিতে জন্ম গ্রহন করেন।
গুরু হিসাবে খালসা সমাজের কাঠামো গড়ে
তোলা। তিনি 'লাভার' লেখেন। যা খালসা ধর্মের বিয়ের চারটি মন্ত্র। তিনি রামদাসনগরীর পরিকল্পনাকার ও শ্রষ্ঠা বলা চলে। এই শহরই পরবর্তী সময়ে অমৃতসর শহরে রূপান্তরিত হয়।
আমৃতসর হয়ে ওঠে খালসা ধর্মের পবিত্র স্থান।
কথিত আছে লাহোর থেকে মাত্র ২৫ কিমি দূরে এক প্রকান্ড জলাশয়ের ধারে গুরু নানক এক মন্দির গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখেন। এই সময় তিনি জলাশয়ের নাম রাখেন অমৃতসায়র।তা থেকে পরবর্তি সময়ে শহরের নাম হয় অমৃতসর। গুরু নানকের জীবনদশায় এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়নি।
অমৃতসরে প্রধান আকর্ষণ হচ্ছে গুরূদুয়ার বা স্বর্ণমন্দির বা ঈশ্বরের আবাস।
১৬০৪ খ্রিষ্টাব্দে ধর্মগ্রন্থ 'গ্রন্থসাহিব' স্থাপন করা হয়। এই মন্দির ৪ বর্গ কিমি ব্যাপ্ত। নিজের ধর্মীয় মানুষ ছাড়াও সারা পৃথিবীর পর্যটকরা স্বর্ণমন্দির দেখতে আসেন সারা বছর। স্বর্ণ মন্দির প্রবেশের কোন বিধি নির্দেশ নেই শুধু মাথায় কাপড়ের আচ্ছাদন লাগে। রুমাল বা কাপড়ের টুকরো হতে পারে। প্রবেশদ্বারে এই নিয়মই চলে আসছে। স্বর্ণ মন্দির একটা জলাশয়ের মধ্যে অবস্থান। জলাশয়টি কাচের সচ্ছ জল। দর্শনার্থিরা জলের উপরে দড়ি টেনে টেনে সামান্য নোংড়া তুলে পরিস্কার করছেন।
মন্দিরে ঢোকার মুখে সুজির হালুয়া প্রত্যেকের হাতে।
খাওয়ার ঘর ২৪ ঘন্টা দর্শনার্থিদের জন্য ঢালাও খাবারের ব্যাবস্থা। বড় বড় রুটি, অড়হরের ডাল, ভাত এরং পায়েস। আশ্চর্যের বিষয় সবাই স্বেচ্ছশ্রমে কাজ করছেন। রান্না থেকে বাসন পরিস্কার অবধি।
স্বর্ণ মন্দিরের পাশে ঐতিহাসিক স্থান জালিয়নায়ালা বাগ। যেখানে গণহত্যা হয়েছিল। যার কথা হলে বুকের ভিতরটা বেদনায় ভরে ওঠে।
জালিয়ানলা বাগ বা অমৃতসর বাগ ঐতিহাসিক হত্যাকান্ড ভারতীয় উপ মহাদেশের ইতিহাসে অন্যতম গণহত্যা। ১৯১৯ খ্রিষ্টাব্দেরখ ১৩ ই এপ্রিল ভারতবর্ষের অমৃতসর সহরে ব্রিটিশ সোনা নায়ক ব্রিগেডিয়ার রেজিনান্ড ডায়ারের আদেশ বলে এই হত্যাকান্ড সংগঠিত হয়।
এই জালিয়নায়লা বাগে নিরস্ত্র জনগণের উপর গুলি চালনা হয়। ১০০ জন গুর্খা সৈন্য সাজোয়া গাড়ি নিয়ে জেনারল ডায়ারের নির্দেশে গুলি করে ২০০০ জনকে হত্যা করা হয়। বাগের মাঝখানের কুঁয়োতে পাথর ফেলে জীবন্ত মানুষকে পুঁতে ফেলা হয়। এই হত্যা কান্ডের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বৃটিশ সরকারের নাইট উপাধি পরিত্যাগ করেন।
অজগরের চারণভূমি অজগরদদ্দার ঃ
মধ্যপ্রদেশের কানহা জাতীয় উদ্যান খুব পরিচিত আমাদের কাছে তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য ও জীববৈচিত্রর জন্য। আর এই কানহা জাতীয় উদ্যানের অনতি দূরে মধ্যপ্রদেশের মন্ডালা জেলায় অতি স্বল্প পরিচিত একটি গ্রাম অজগরদদ্দার। স্থানটির মূখ্য বৈশিষ্ঠ হলো এখানে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক পরিবেশে দেখা মিলবে অজগরের Indian Rock Paythan বিজ্ঞান সম্মত নাম Paythan Marulus অজগর মূলত পাইথনিডি পরিবার ভূক্ত দীর্ঘ এবং বিষহীন প্রজাতির সাপ। যার দৈর্ঘ্য ৩ মিটারের ( ৯,৮ ফুট দীর্ঘ ) মত হয়ে থাকে।
প্রায় ১ থেকে ২ একর পাথুরে জমিতে মূলত আগ্নেয় শিলায়, যার নীচে আছে ডলোমাইট খনি। আর এই পাথরের খাদে খাদে আছে হাজার হাজার অজগর সাপ। অঞ্চলটি মূলত হালকা ঝোপ ঝাড় যুক্ত। বন বিভাগ এই অঞ্চলটির খোঁজ পাওয়ার পর, এই অঞ্চলটিকে সরকারের পক্ষ থেকে অধিগ্রহন করে এবং এলাকাটিকে প্রস্তাবিত সংরক্ষিত হিসাবে চিহ্নত করা হয়। একটি ওয়াচ টাওয়ার বসানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। অঞ্চলটি সংরক্ষণের জন্য এলাকার পঞ্চায়েত ও গ্রামবাসি এগিয়ে এসেছেন। গ্রামের মানুষ বহুলাংশে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। প্রাকৃতিক পরিবেশে এত অজগরের আবাসস্থল পৃথিবীতে অন্য কোথাও নেই। এই দুর্লভ এলাকাকে রক্ষা করা এবং পরিবেশের ভারসাম্য বজাই রাখতে অঞ্চলটির যথাযথ সংরক্ষণ ও পর্যাবেক্ষণ বিশেষ ভাবে প্রয়োজন।
0 মন্তব্যসমূহ