পাহাড়িয়া গ্রাম চারখোল ঘুরতে যাওয়ার কথা
ঝকঝকে
শীতের
আকাশ
মাঘী
পূর্ণিমার
পূর্ণ
চাঁদ।
রূপালী
আলো
ভাসিয়ে
নিয়ে
যাচ্ছে
দিগন্ত।
আমরা
চলেছি
ট্রেনে
নিউ
জলপাইগুড়ির
উদ্দেশ্যে। ছোৎস্নায়
মধ্য রাতের স্নান করে নিতে কেউ কুন্ঠিত না। কিছুক্ষণের
মধ্যে ভোর হবে। সব আলো গিলে খাবে ভোরের রোদ্দুর।
এসে গেল নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশান।
এবার ভাড়া জিপে উঠে পড়লাম। আমাদের গন্তব্য আজকের দিনের আলোয় পৌঁছে যাবো চারখোলায়।
শিলিগুড়ি থেকে কালীঝোরা পার হয়ে তিস্তা বাজার তরপর কালিপং। মোমোর মিষ্টি সুবাস ---
চায়ের দোকানের মজলিশ। আঁকাবাকাঁ পাহাড়ি পথের প্রেম চাগিয়ে তোলে। নীল আকাশ, শ্বেতশুভ্র মেঘমালা আর পাখিদের চঞ্চলতা মুগ্ধ করছে খুব। ছোট ছোট পাহাড়ি গুমটি। কাঞ্চনজঙ্ঘার মোহিনী মায়া। আপ্লুত হয়ে যাবার মত মিষ্টি ছবি। প্রথম দর্শনেই প্রেম। চারিদিক মেঘ অপূর্ব ক্যাপসান। মেঘ বালিকাদের অপার হাসি।
আমরা পৌঁছে গেলাম আগে নির্ধারিত হোমস্টেতে। এখানই খাওয়া-দাওয়া। একটু বিশ্রাম নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম, দেখছি এলাচ গাছ। স্কোয়স, ঝাড়ু গাছের আদোর নিলাম।
কমলালেবুর বাগানে উদার মনে ঘুরাঘুরি। কমলা ছেড়াও নিশেধ হাত দেওয়া নিশিদ্ধ, চাইলে কেনাকাটা করা যায়। বেশ ঘুরাঘুরির পর আপন ডেরায় ফিরে আসলাম। এবার সন্ধ্যর টিফিন ছোলা মুড়ি ডিমের পোজ আর বড় এক গ্লাস র চা।
চারখোলা -
সময় কাটানোর আদর্শ জায়গা হচ্ছে চারখোল। চার কিমি পর দেখতে পাওয়া যাবে পাবংকে। ভরী সুন্দর জায়গা পাবং।
রাত্রির ডিনার খেয়ে হালকা গল্প আড্ডা তারপর ঝিঁ ঝিঁর ডাক শুনতে শুনতে ঘুমের কোলে ঢলে পড়া।খুব ভোরে উঠে পড়া। সামনে কাঞ্চনজঙ্ঘা। যেন লাজুক কনে বৌ এক। নরম আলোয় ভিজে আছে। শান্ত অথচ বাঙ্ময় ! সচ্ছ মেঘ ভেসে বেড়ায় আকাশে।
কি ভাবে যাওয়া যায়:--
কলকাতা থেকেNJP বাসে বা ট্রেনে। এরপর শিলিগুড়ি বাসস্ট্যান্ড থেকে শেয়ার জিপে কালিম্পং। এখান থেকে গাড়িতে চারখোলা।
কখন যাবার সময়:--
অক্টোবর থেকে মার্চ উপযুক্ত সময়।
কোথায় থাকবেন :---
চারখোল আর পাবং-এ আছে হোমস্টের সুন্দর ব্যাবস্থা। যোগাযোগ করা যাবে
লাচুং-চুং প্যাকেজ ট্যুর
গ্যাংটক থেকে গাড়ি ছাড়ে উত্তর সিকিমের অভিমুখে। উত্তর সিকিমের এই সফরটা প্যাকেজ ট্যুরের মধ্যে করা ভালো। গাড়ি,হোটেল, খাওয়া-দাওয়া সব খরচ ধ্যার্য্য হবে জন প্রতি মাথাপিছু রেটে। উত্তর সিকিমে ঘুরবার অনুমতি পত্র প্রয়োজন। অনুমতি গ্যাংটক থেকে সংগ্রহ করতে হবে। লাগবে ভোটার আই ডি, আধার কার্ড, পাসপোর্ট সাইজ ফোট দুই কপি। গ্যাংটকের হোটেলগুলো Permit এনে দেয়।
এবার বেড়ানর কথায় আসি:-
ভোর বেলা যাত্রা শুরু করে তাশি ভিউ পয়েন্ট, কাবি, ফুদুং,মঙ্গন, সিংঘিক অতিক্রম করে পৌঁছে যাওয়া যায় লাচুং-চুং এ। পথে পড়বে ফেদম গুম্ফা, সেভেন সিস্টার ফলস। পথে পড়বে চুংথাং গুরুত্ব জনপদ। লাচুং থেকে বয়ে আসা নদী লাচুং (চুং- মানে নদী) ও লাচেন থেকে বয়ে আসা লাচেন চু(নদী)।দুটি নদীই এখানে মিতালী গড়েছে। এরা নীচের দিকে তিস্তা নামে জগত বিখ্যাৎ। বিরাট সামরিক ছাউনি আছে এখানটায়। চুংথাং থেকে ২২ কিমি আর ১১৮ কিমি দূরে আঁকা বাঁকা পথে ঘুরে ঘুরে পৌঁছান যায় লাচুং গ্রামে। সকল সময় সঙ্গ দেবে লাচুং চু। ৮৬০০ ফুট উপরে অবস্থিত লাচুং গ্রামটি। মূলত লাচুং পা সমপ্রদায়ের মানুষজন বসবাস করে এখানে। উঁচু পাহাড়ে ঘেরা গ্রামটি। নিসর্গ প্রকৃতিকে আরো সুন্দর করেছে সুন্দরী ঝর্ণা, তরুলিত চন্দ্রিকা চন্দন বরণা। সময় থাকলে দেখে নিন কার্পেট বুনন কেন্দ্র। ঘুরে আসুন ১১৮০০ ফুট উঁচুতে অবস্থিত 'ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ার '। দেখতে পাবেন ভিন্ন প্রজাতির রডোডেনড্রন,প্রিমুলা এবং না না ধরনের ফুলের সমারোহ। যেন নন্দনকানন হয়ে ওঠা এই উপত্যকা। ডিসেম্বর থেকে মার্চ মাস অবধি উপত্যকায় দেখতে পাবেন অন্য রূপ।
উঁচু পাহাড়ের সারি, রাস্তাঘাট, উপত্যকা সবই বরফের পুরু আস্তারণে ঢাকা। সবুজ উপত্যকার বুক চিরে দেখতে পাবেন পাহাড়ী নদী। খুব সুন্দর লাগবে।
0 মন্তব্যসমূহ