Ticker

6/recent/ticker-posts

Header Ads Widget

Responsive Advertisement

ওড়িশার অচেনা এই সমুদ্র সৈকতের ব্যাপারে অনেকেই জানে না - আপনি জেনে নিন


ওড়িশা বললেই মনে আসে পুরী । আর পুরী মানেই প্রানবন্ত এক সমুদ্র সৈকত সাথে জগন্নাথ দেবের মন্দির । কিন্ত ওড়িশায় অনেক অল্প চেনা সমুদ্র সৈকত আছে যেখানে গেলে মন ভালো না হয়ে উপায় নেই । এমনই এক সমুদ্র সৈকতের কথা জানাবো আপনাদের ।  ছড়ানো  বেলাভূমি, শান্ত নীল দিগন্তছোঁয়া বঙ্গোপসাগর বালুকাবেলায় পা-ডোবান পাখি,  অসংখ্য লাল কাঁকড়ার সমারোহ। আর বিস্তির্ন ঝাউবন, জেলেদের দৈনন্দিন জীবনধারার ছবি। ওড়িশার এই সমুদ্র সৈকতের --নাম দাগারা। দীঘা থেকে খুব দূরে নয় এই সমুদ্র সৈকত কিন্ত এখনও তেমন পরিচিতি লাভ করেনি। হওড়া থেকে দুঘন্টায় পৌঁছান যায় জলেশ্বর স্টেশনে। এখান থেকে দাগারার দৃরত্ব মাত্র  ৩৫ কিমি মাত্র।

জলেশ্বর একটি ছোট শহর। দিঘা থেকে এই শহরের দুরত্ব মাত্র ৫৫ কিমি। 

সামনে বেঁধে যাবে খুব পরিচিত সুবর্ণরেখা নদী। বালি মাফিয়ারা শেষ করে দিয়েছে নদীগুলোকে। সুবর্ণরেখার বুকের উপর অর্থাৎ ব্রিজের উপর দাঁড়িয়ে মন ভরে দেখে নিলাম প্রিয় সুবর্ণরেখাকে। আর এ নদী মিসেছে দাগারায়,  সে মিসে যাবে বঙ্গোপসাগরে। চোখে পড়ল হাজার বিঘে জমিতে ফলে ওঠা শীতের শব্জীক্ষেতগুলি। এঁকে বেঁকে চলে গেছে গ্রাম্যপথ আর পাশে সবুজ সব ধানক্ষেত।

এবার পৌঁছে গেলাম কালিয়াপাল একটা বড় গঞ্জ। এখানে এলে  জগৎ বিখ্যাৎ ছানাপোড়া মিষ্টি খেতেই হবে। একটা দোকানে থেকে ছানাপোড়া মিষ্টি অর্ডার করাতে এক প্লেট ছানাপোড়া মিষ্টি পেয়ে খেতে লেগেছি। আঃ কি স্বাদ, অসাধারণ। সকালে  যত মিষ্টি হয় সন্ধ্যার আগেই সব বিক্রি হয়ে যায়। দু'প্যাকেট বাড়ির জন্য নিয়ে নিলাম। এবার রওনা হলাম দাগারার দিকে। 

আমাদের হোটেলের গা-ঘেসে ঝাউবন । ঝাউবন শেষে সমুদ্র। সন্ধ্যা অবধী সমুদ্র পাড়ে ঘুরাঘুরি করা হল। সন্ধ্যা শেষ হতেই হোটেলে প্রবেশ করতে হল। কেননা শান্ত নিরিবিলি সৈকতে কোন মানুষ পাওয়া গেল না। তাই অগত্যা। পরদিন সকালের প্রস্তুতি নিতে হল।

পরদিন সকালে প্লান ছিল লাল কাঁকড়া দেখা ও ছবি তোলা। কাঁকড়ার দেখা মিললো না কিন্তু সুমদ্র ফেরতজেলেদের কাছ থেকে টাটকা মাছ পেয়েগেলাম। মাছ কিনে হোটেলের রান্নাঘরে দিয়া হল রান্নার জন্য। 

এবার ঝাউবনের বুক চিরে হাঁটতে লেগছি। এক সময় সমুদ্রের কিনারে এসে পেয়ে গেলাম ঝুপড়ি চা-দোকান। জমপেস করে চা-বিস্কুট খেয়ে  উঠে পড়লাম। আদতে দাগারা নতুন একটা টুরিষ্ট স্পট। সে ভাবে গড়ে ওঠেনি এখনো। মনে হল বিকালের দিকে একটু মানুষের ভীড় বাড়ে।

যাইহোক সমুদ্রের কিনার দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে চলে এলাম লাল কাঁকড়ার মিছিল দেখতে। কিন্তু ছবি তুলতে গেলেয় বালির গহ্বরে মুখ লুকিয়ে নিচ্ছে। তারপর আরো কিছুটা যাওয়ার পর পেয়ে গেলাম সুবর্ণর সঙ্গমস্থল। তার ওপারে চাঁদাবালি সৈকত। 

কয়েকটি জেলে নৌকা সমুদ্রের গভীর থেকে আস্তে আস্তে কিনারায় ভিড়লো। মাছের ঝুড়ি নামিয়ে নিয়ে এল। এখানে বেশ মানুষের ভীড় আছে পাইকেড় এবং স্থানীয় মানুষজন। মাছ ইলিশ, পমফ্রেট, পার্শ্বে, পবদা এবং নানা প্রজাতির চুনো মাছ। আমি কিছু মাছ কিনলাম। হোটেলের রাঁধুনীদের হাতে পৌঁছে দিলাম।

দুপুরে ইলিশ ভাজা আর পমফ্রেন্টের ঝাল। তৃপ্তি সহকারে মধ্যাহ্ন ভোজ সারা হলো। দাগারা সৈকত দুপুরে একদম শুনশান। দুপুর গড়ালেই মানুষের আনাগোনা বাড়ে, কোলাহল এড়িয়ে একটু এগতেই দেখা গেল লাল কাঁকড়াদের। ঘুরছে - ফিরছে, বালি খুঁড়ে আস্তানা বানাচ্ছে। বেশ কটা ফটো তুললাম। পড়ন্ত বিকালের সোনালি আলোয়, সোনালি বেলাভূমিতে তাদের গায়ের টকটকে লাল রং প্রকৃতির সৌন্দর্যে দিয়েছে দীপ্তি। দূরের সমুদ্রের তীর বরাবর সূর্য্য অস্ত গেল।

কীভাবে পৌঁছাবেন :- হাওড়া থেকে জলেশ্বরে যাওয়া যাবে ভূবনেশ্বর স্পেশাল ট্রেনে। ছাড়ার সময় ১টা২৫ মিনিটে। 

কোথায় থাকবেন :- ক্রাউন অব ইন্ডিয়া, লক্ষী, হোটেল প্যারাডাইস, বালাসোর পান্থনিবাস। 

ওড়িশার অচেনা এই সমুদ্র সৈকতের ব্যাপারে অনেকেই জানে না - শেয়ার কএ ভ্রমন পিপাসু বন্ধুদের জানান । 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ