Header Ads Widget

Responsive Advertisement

দিউ ভ্রমণে শুধুই আনন্দ আর ইতিহাস জানার স্পৃহা

 দিউ ভ্রমণে শুধুই আনন্দ আর ইতিহাস জানার স্পৃহা :-


সেই স্কুল জীবনে পাঠ্য বইয়ে পড়ছি দমন দিউ কেন্দ্র শাসিত একটি অঞ্চল। সেউ দমন না দিউ নিয়ে এই লেখার অবতরণা। দিউএ ঢোকার পথে  দেখা যাবে লাল রঙা বিশাল তোরণ। তোরণটির নাম 'ঝম্পা গেটওয়ে'। শীর্ষে সিংহ, দেবদূত, যাজক ও ক্রশ চিহ্ন। তবে দউয়ে প্রতিটি বিষয় পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে জানতে হবে। এখানে ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট, কেল্লা, গীর্জা, ছবির মত ঘর-বাড়ি, বুলেভার্ড পথ আর পর্তুগীজ স্থাপত্য ও বনেদিয়ানা চোখে পড়ার মত। 
ষোড়শ শতকের শেষ ভাগ ।  সুদূর পর্তুগাল থেকে  পর্তুগীজরা ব্যবসার অজুহাতে দিউতে এসে  নিজেদের আখের গুছাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। দিউ তখন সমুদ্র উপকূলের এক বড় ব্যবসাকেন্দ্র। পর্তুগিজরা এখানে দুবার ঘাঁটি গাড়তে ব্যর্থ হয়। দিউকে নিজের দখলে রাখতে গুজরাটের সুলতান বাহাদুর শাহ ও মোগল বাদশা হুমায়ূন উদ্যোগ নেন। বাহাদুর শাহ পর্তুগিজদের সাথে 'রফা - সন্ধি' করেন।পর্তুগিজরা সুযোগের সদ্ব্যবহার করতেও দেরি করে না। ফলে, দিউ অঞ্চল অচিরেই তাদের দখলে চলে যায়। বাহাদুর শাহকে তাঁর উদারতার খেশারত দিতে হয়। পুর্তগিজদের সাথে দেখা করতে  যেয়ে নৌকা ডুবিতে দুর্ভাগ্যজনক ভাবে মারা যান তিনি। 
ইতিহাসগাথার সঙ্গে  দিউ-এর  প্রসিদ্ধী শতাব্দী প্রচীন কেল্লা আর প্রাচীনতার চিহ্ন পর্তুগিজের ক্যথেড্রলের জন্য। এছাড়া মনোরম সৈকত আর মৎস্য বন্দরের খ্যাতিতো আছেই। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় নগর উন্নয়ণ দপ্তরের আওতায় ' স্মার্ট সিটি চ্যালেঞ্জ ' তালিকায় বাছাই করা ১০০টি শহরের মধ্যে ঠাই পেয়েছে দিউ।
দিঊ-এর আর একটি বিশেষত্ব চারিত্রিক গঠন হল দিগান্তরটি নেহাতই সীমিত। দিউ ৪০ বর্গ কিলোমিটার বিছিয়ে থাকা অঞ্চলে আর কোন হাইরাইজ বিল্ডিং নেই।  পুর্তুগিজদের নিজস্ব সাবেকি ডঙ্গের  লাল রঙের ছাঁদ একতলা, দুইতলা একই ছাঁচের বাড়ি-ঘর শহর জুড়ে দেখা যাবে। অন্যতম দর্শনীয় হচ্ছে সেন্ট পল্স চার্চ। ১৬১০ সালে তৈরী । যিশুখ্রিষ্টের১২ জন শিষ্যের মধ্যে একজন সেন্ট পলের নাম অনুযায়ী এই চার্চের নাম দেওয়া হয়। গোয়ার ' ব্যাসেলিকা বম জেসাস 'চার্চের সাথে মিল আছে যথেষ্ট। পুর্তগিজ ঘরনার বরোক স্থাপত্য শৈলি। অন্দর শয্যাও অপরূপ। মাত্র একটি টিক কাঠের খন্ড দিয়ে পূজাবেদি তৈরী। ফুলের বাগান, ফোয়ারা খুবই দৃষ্টি নন্দন। ১৫৯৩ সালে  নির্মিত সেন্ট ফ্রানসিস গির্জিঘরটি অতিব সুন্দর। ১৯৯৮ সাল থেকে এখানে গড়ে উঠেছে একটি মিউজিয়াম। মিউজিয়ামের  সংগ্রহ খুবই ঋদ্ধ।
দিউ কেল্লার স্থানীয় নাম ' পুর্তগালি কেল্লা'। ১৫৩৫ সালে প্রযুক্তিবিদ্য Nuno De-Chunaha -র তত্বাবধানে তৈরী হয়।  এই ঐতিহাসিক দূর্গে দুটি পরিক্ষা আছে। সব অংশের পুরাতন নাম St-George নামে। সে আমলের প্রাক্তন ক্যাপটেন Nanel De-Souza-De-Supulveda দূর্গের মধ্যে বুরুজ গড়ে তোলেন। বর্ষার জল ধরবার জন্য রয়েছে King and Queen জলাধার। দূর্গের তিন দিক অতল আরব সাগরের নিরাপদ বেষ্টিত। প্রায় ৫৬,৭৩৬ বর্গফুট এলাকা জুড়ে এই দূর্গের অবস্থান। পুরো দূর্গ ঘিরে উঁচু শক্তপোক্ত পাঁচিল। ছাতে পাশাপাশি কয়েকটি কামান রাখা আছে। আছে বাতিঘর, নজরমিনার ও কয়েদখানা। দূর্গের ভিতরে গোলাবরুদ,  অস্ত্রশস্ত্র, শষ্যের আড়ত। মাটির নীচে ভূগর্বস্থ গুপ্ত প্রতিরোধ ব্যবস্থা। এশিয়ার মধ্যে অন্যতম বিখ্যাৎ এই পুর্তগিজ দূর্গকে  পর্তুগালের নিজস্ব সংজ্ঞায় পর্তুগীজ স্থাপত্যের সপ্তম আশ্চর্য্যের অন্যতম বলে চিহ্নত করা হয়েছে। যার পোশাকী নাম 'Praca De-Diu-in-Partugal'। দূর্গ জলের তলায় গুপ্ত পরিখা দিয়ে পানিকোঠায় ঢোকার ও বেরোনের ব্যবস্থ্যা অতীত যুগের প্রযুক্তিবিদ ও বাস্তুকারদের তুখড় মুন্সিয়ানার পরিচয় দেয়।
দিউর নয়ডা গুহাকে ' ফটোগ্রাফারস প্যরাডাইস' বলা হয়। অববিট এই নয়ডা কেভ। আকর্ষণীয়ও বটে। প্রতিটি পথই হচ্ছে গোলক ধাঁধার। এত বছর পর বহে চলা নোনা হাওয়ায় মাটির নীচের দেওয়াল খসে যাচ্ছে। উপযুক্ত আলো থাকতে গুহাটি দেখে নিতে হয়। 

কীভাবে যাবেন ঃ- গুজরাটের ভেরাবল স্টেশন অথবা সোমনাথ থেকে গাড়ি ভাড়া করে দিউ যাওয়া যায়।
কোথায় থাকবেন :- প্রচুর রিসর্ট, হোটেল, গেষ্ট হাউস আছে অন লাইনে বুক করে যাওয়া বাঞ্ছনীয়।
কখন যাবেন:- যে কোন সময়।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ