Header Ads Widget

Responsive Advertisement

বৈচিত্র্যময় বিচিত্রপুর ঘুরে আসার সম্পূর্ণ গাইড

 বৈচিত্র্যময় বিচিত্রপুর ঘুরে আসার সম্পূর্ণ গাইড ঃ-


দীঘাতো সবাই ঘুরতে যাওয়ার একমাত্র পর্যটন স্থান। নিউ দীঘায় ঘুরতে যেয়ে খোঁজ পাওয়া গেলো বিচিত্রপুরের। উড়িষার তালসারিতে নাম শুনা যাবে বিচিত্রপুরের। 
এখান থেকে সীমান্ত পেরিয়ে যেতে হবে উড়িষ্যার বিচিত্রপুরে। চন্দেনশ্বর মন্দিরের পাশ দিয়ে আঁকাবাঁকা প্রায় ১৮ কিলোমিটার কংক্রিটের সরু রাস্তা ধরে গেলেই বিচিত্রপুর। পথের দু পাশে মায়া মাখান সবুজের সমাহার। পুকুর, আর বিক্ষিপ্ত সব ঘরবাড়ি। কোথাও রাস্তার দু পাশে পানের বরজগুলি দেখা যাবে।  এবার আঁকাবাঁকা পথ ধরে রোদ্দুর আর ছায়ার মিক্সি মেখে পৌঁছে যাওয়া যায় ম্যনোগ্রোভ ফরেষ্টের দোরগড়ায়। একটি রিমোট ভিলেজ, আর জেলেদেরে বসতি। ওড়িষা ফরেষ্ট  ডেভলাপমেন্ট অফিস থেকে টিকিট কাটতে হবে। এবার হেঁটে বিচিত্রপূর বা পাশের জেটির ধারে ম্যনোগ্রোভ, প্লানটেশন ঠিক শাল, ইউক্যালিপটাস, আকাশমণির ফরেষ্ট যে ভাবে তৈরি হয়, ঠিক তেমন আরকি। তবে এই প্লানটি তৈরি জলের নীচে। কেয়ারটেকার এক দুই করে গাছগুলির নাম বলে দিলেন অনায়াসে। গরান, গেঁওয়া, সুন্দরি গাছ অন্যান্য গাছেদের চারা দেখা যাবে। এবার জেটি ঘাটে থেকে ৮ সিটের ফাইবার স্পীড বোট চড়ে খালের জলে ভেসে পড়া যাবে। চারিপাশে সবুজাভ জলের রাশি ছলকে ছলকে উঠছে। মাঝ পথে দেখা যায় ধীবরা নৌকায় অপন মনে মাছ ধরছে। এই প্রতিকুল অবস্থায় মানুষের জীবন সংগ্রাম কিন্তু অব্যাহত।  ১৫, ২০ মিনিট পরে পৌঁছান যাবে নোনা জলে ভেজা ম্যানগ্রোভের দেশে। সুবর্ণরেখা নদী এখানে থেকে যেয়ে সমুদ্রে মিলেছে। ভাঙা পাড়, অদ্ভূত জ্যামিতিক নক্সার টুকরো ভূখন্ড। আসা যাবে দ্বীপের মত জায়গা। এটাই বিচিত্র পুর। দিনে মাত্র ছয় ঘন্টা দ্বীপটি জেগে থাকে। তাই বিরাট আকর্ষণ।
সামনে এগিয়ে গেলে বালুকাবেলায় দেখা যাবে মরা গাছ অভিনব শৈল্পিক ভঙ্গিমায় দাঁড়িয়ে আছে। এই অপূর্ব ন্যাচারাল ইন্সটেলশন দেখলেই চোখ জুড়িয়ে যাবে।
অদূরে চোখে পড়ে দিগন্ত বিস্তৃত মোহনা। সুবর্ণরেখা সমুদ্রকে পরস্পরকে জড়িয়ে ধরে আছে একান্ত ভাবে। বিস্তীর্ন বালুতট জুড়ে জেগে আছে ঝাউবন। অন্যপাশে ম্যানগ্রোভ গাছপালা জোয়ারের জলে ভিজা মাটিতে তাদের শ্বাসমূল উঁচিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। বালুচরে লুকোচরি খেলছে কাঁকড়ার ঝাঁক ঝাঁক বাহিনী। জোয়ারের জল ঢুকতেই ঢুকতেই বাইরে বেরিয়ে আসছে শয়ে শয়ে কাঁকড়ার ফিডলার ক্রাব। জোয়ারের জলে পা ডুবিয়ে খাবার খুঁজেছে সাদা সাদা বক। কাদামাটিতে ঘুরে বেড়াচ্ছে Mudskiper আর Horse shoe carb। ম্যানগ্রোভ জীববৈচিত্র পরিদর্শনের জন্য বিচিত্রপুর অবশ্যই আদর্শ একটি জায়গা। এখান দেখতে পাওয়া যাবে নানান প্রজাতির কাঁকড়া, পাখি, সরিসৃপ, ঝিনুক, ম্যনগ্রোভ গাছ ইত্যাদি। নভেম্বর থেকে জানুয়ারী পর্যন্ত সমুদ্রের থেকে উঠে আসে লক্ষ লক্ষ রিডেল কচ্ছপ। ফেব্রুয়ারিতে পরিযায়ী পাখির মেলা বসে এখানকার খাড়িগুলিতে। এই বিপুল জীব বৈচিত্র ও ভ্রমণের সুন্দর ব্যবস্থাপনার জন্য আজ থেকে তিন বছর আগে ভ্রমণের জন্য শুরু হওয়া এই স্থান বতর্মানে প্রকৃতি প্রেমীদের কাছে এক চরম আকর্ষণীয় কেন্দ্র হিসাবে উঠে আসছে। এক স্বর্গীয় প্রশস্তি ও নিরাবতা চারিদিক। বিচিত্রপুরের অপার্থিব নির্জনতাকে ভালোবেসে কাটানোর মুহূর্তকে যেন মনে হয় টাইম এন্ড স্পেস-এর বাইরে দিয়ে চলেছে। এবার ফেরার সময় হয়ে এল। বোটে চলে আসা যাবে। এক ঝাক বক উড়ে যায় নীলিমায়। এবার দেখা মিললো গোবক,মাছরাঙা, পার্পেল, হেরণ, পানকৌড়ি, শামুকখোল প্রভৃতি পাখিদের। এই এলাকা স্নেক রিহাবিটেশন স্পট, তাই  এলাকার কেউ জলে নামে না। ফেরার পথে বিচিত্রপুর অভিবাদন জানানই শ্রেয়। অবাক বিস্ময়ে সবাই তাকিয়ে থাকে বিচিত্রপুরকে। ভালো থেকো তোমরা।
কীভাবে যাবেন বিচিত্রপুরে ঃ- ধর্মতলা, কলকাতা থেকে বাসে হাওড়া। হাওড়া স্টেশন থেকে ট্রেনে দীঘা আসতে হবে। নিউ দীঘা থেকে  গাড়ি ভাড়া করে চলে আসা যাবে বিচিত্রপুরে। 
থাকা ও খাওয়ার জায়গা ঃ- বিচিত্র পুর ইকো টুরিজুমে থাকি ও খাবার ব্যবস্থা আছে। যোগাযোগ রিসর্স ম্যানেজার ইকো টুরিজুম।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ