Header Ads Widget

Responsive Advertisement

পরিবেশ বান্ধব কালিপুর ও লাটাপাঞ্চার ঘোরার গাইড

পরিবেশ বান্ধব কালিপুর বেড়িয়ে  আসি চলুন।



ধর্মতলা থেকে রাত্রির বাসে শিলিগুড়ি। তারপর শেয়ার কারে লাটাগুড়ি। এখান থেকে  কালিপুর ইকো ভিলেজ। 
সেবক, করোনাশন ব্রিজ, কালিঝোরা, লাটাগুড়ির পরেই কালিপুর। শান্ত ও স্নিগ্ধ পরিবেশ। বাঁশ দিয়ে তৈরি মাচান ঘর। চা-বাগানের অপরূপ দৃশ‍্য। 
এখানে মোষগাড়িতে ঘুরার ব‍্যাবস্থা খুবই আকর্ষণীয়। জলঢাকা নদীর চরে দেখা মিলবে  দুধ সাদা বক, কাঁদাখোচা পাখি আরো অনেক পক্ষিকুল। জলঢাকায় কোন কোন সময় বুনসুয়োর, বাইসন, গন্ডার প্রভৃতির দেখা মিলতত্র। আর নিস্তব্ধতার প্রকৃষ্ট উদাহরণ দেওয়া চলে । বিচ্ছিন্ন বাতাস গায়ে  মেখে  অরণ‍্যের গান শুনতে  ভালো  লাগে।
হাতির হাওদায় উঠে গভীর জঙ্গলে  ঘুরে আসলে  অন‍্য রোমাঞ্চ অনুভব করা যাবে।
এবার দুপুরের লাঞ্চ শেষ করে একটা অটো ভাড়া করে আসা যাবে ময়ৃরীনে। এই বনে পাবেন টিয়া-বুলবুলি-ময়না-ফিঙ্গে -ঘুঘু-চন্দনা। দেখতে পাবেন বনমোরগ আর বিস্তর এলাকা জুড়ে হরণের ছুটাছুটি। ময়ূর-ময়ূরীদের মোক্ষম আবাসস্থল এই ময়ূরীবন।
পাশেই ঘুরে আসা যাবে বড়দিঘি চাবাগান,ছাঁওফুলি জঙ্গল, কলাখাওয়া নজর মিনার,নেওড়া নদী,সুরসতি জঙ্গল, ভান্ডারিবাবার মন্দির,নিশান ডোবা ক‍্যানল, চাটোয়া, বুধুরাম, কালামাটি, চেকেন্দার, ভান্ডারি গ্রাম, কুমলাই, ক্রানারি বাজার, নেপুচাপুর, কান্তদিঘি এরকম নামের পাহাড়ি বসতি।
কীভাবে যাবেন :-- শিয়ালদহ থেকে অনেক ট্রেন আছে। বাসে  নিউ জলপাইগুড়ি। স্টেশনের বাইরে  পাবেন শেয়ার জিপে লাটাগোড়ি।
কোথায় থাকবেন :-- প্রচুর হোম স্টে আছে। আছে রিসর্ট। থাকা-খাওয়া চার্জ একসাথে।

লাটাপাঞ্চার ঘুরতে চলুনঃ-
শিলিগুড়ির বিশাল সিনেমা হলের পাশ থেকে লাটপঞ্চারের যাওয়ার জন্য ট্রেকার ছাড়ে। কালিঝরা হয়ে খাড়া চড়াই পেরিয়ে সুন্দর একটি পাহাড়ি গ্রাম লাটাপাঞ্চারে পৌঁছে  দু-চোখ ভরে দেখে নিন পাহাড়ের প্রাকৃতিক শোভা। তবে এপথে ট্রেকার আর ছোট বাস ছাড়া আর কিছু পাওয়া খুবই সমস্যা। শিলিগুড়ির অনতিদূরে পানিট্যাঙ্কির মোড়ে এসে দেখলাম অসংখ্য জানবাহন, বাস, ট্রেকার, ইত্যাদি শুধু গাড়ির আড্ডা -দার্জ্জিলিং, গ্যাংটক, ফুন্টশিলিং, সামসিং, গরুবাথান, লাভাসহ আরো অনেক ডেস্টিনেশানে গাড়ি ছুটছে অনবরত।
একটা ছোটগাড়ি ভাড়া করে রওনা হলাম লাটাপাঞ্চরের উদ্দেশ্য। আমাদের অ্যাম্বাসাডরটা কমলা রঙের এবং নতুন। গাড়ি শহর ছাড়িয়ে হু হু করে ছুটলো। আমরা মহানন্দার অভয়ারণ্যের ঋজু শাল বৃক্ষের অপূর্ব ঘন বন পার হোতে ভালোই লাগছিল।
কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যে আকাশ কালো হয়ে এলো। ঝম ঝম করে অঝরে বৃষ্টি নেমে এলো, ড্রাইভার বল্লেন, এখানে এরকমই হয় এই বৃষ্টি এই রোদ্দুর।  বর্ষায় গোটা পাঁচেক হনুমানগুলো ভিজতে দেখলাম।
সেবক রেলগেটের কাছে আসতেই বৃষ্টি কোথায় যেন হারিয়ে গেল। আমাদের গাড়ি দাঁড়িয়ে গেলো, কেননা রেল পাস হবে এখন।  এগিয়ে কাঁচা ভুট্টার পসারী। পাশেই উনুনে পোড়ান হচ্ছে কাঁচা ভুট্টা। শুনলাম বারো মাসই এই রেল গেটে আধপুড়া ভুট্টা বিক্রি হয়।
হুইসেল বাজিয়ে তিস্তা-তোর্ষা এক্সপ্রেস ছুটে গেলো। রেল গেট খুলে গেলো। আমরাও রওনা দিলাম। থামলাম একটু পাহাড়ের গায়ে একটি শিব মন্দির আর কালি মন্দির দেখবার জন্য। মন্দির দু-টি দেখে আবার রওনা হলাম। পাহাড়ি আঁকাবাঁকা পথে তুঁত জলের তরঙ্গিনী তিস্তার তিরে বেয়ে গাড়ি ছুটছে কালিঝোরার দিকে। রাস্তা মেরামতির কাজ চলছে, কাজেই গতি শ্লথ হলো কিছুটা। কাজ করছে ফুটফুটে ফর্সা ফুলের মত নেপালী মেয়েরা। রঙিন পোশাকে, দু-গালে ফুটে উঠেছিল রঙিন আভা। করোনশান ব্রীজ বা বাঘপুল অবধী কাজ চলছিল।
চলে এসেছি কালিঝোরায়। NHPC -র বিশাল জলবিদ্যুত কেন্দ্র রাম্বি-কালিঝোরায়। পুর্ত দপ্তরের বাংলো ছাড়িয়ে এগিয়ে চলেছি। খানিকটা গিয়ে ডান দিকে মোচড় দিয়ে লাটাপঞ্চারের পথ পেলাম। এবারের রাস্তা মিললো আঁকাবাঁকা কর্দমাক্ত। খানিকটা গিয়ে গাড়ি হপিয়ে উঠলো। ড্রাইভার গাড়ির সাময়িক বিশ্রামের জন্য আমাদের কিছুটা হাঁটতে বল্লেন। নেমে হাঁটাহাঁটি করছি, একজন কৃষক ক্ষেতে কাজ করছিল। তাঁকে জিজ্ঞাসা করলাম,  লাটাপাঞ্চার কতদূর? 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ