Ticker

6/recent/ticker-posts

Header Ads Widget

Responsive Advertisement

মাদিকেরি ও মহীশুরে কিভাবে যাবেন ? কি কি দেখবেন ? জেনে নিন

পশ্চিমঘাট পাহাড়ের কোলে কর্নাটকের শহর মাদিকেরি। ইতিহাস ও প্রকৃতি প্রেমী পর্যটকদের মত মুগ্ধ করার মত উপাদান ছড়িয়ে রয়েছে কুর্গ জেলার এই সদর শহর। 



মহীশুর থেকে মাদিকেরি দূরত্ব ১২০ কিমি।
এই যাত্রা পথে দেখে নিন আরও কয়েকটি দর্শনীয় স্থান। দুই শহরের মধ্যে বাস চলাচল করলেও, মাঝপথে দ্রষ্টব্যগুলি দেখতে গাড়ি ভাড়া করতে হবে। 
মহীশূর থেকে সকাল সকাল রওনা দিতে হবে। পাহাড়, জঙ্গল, গ্রাম, কফিবাগানের মধ্য দিয়ে রাস্তা। 
প্রথম গন্তব্য ৮০ কিলোমিটার দূরের বেলাকূপে। ম্যাঙ্গালোর গামী হাইওয়ে ধরে, গ্রামগঞ্জ, চাষের খেত পেরিয়ে দক্ষিণ ভারতের বৃহত্তম তিব্বতী শরণার্থিদের বাসস্থান। বেলাকূপে পৌছাতে সময় লাগে ঘন্টা দেড়েক।  এখানে দেখা যাবে দৃষ্টিনন্দন বুদ্ধ মন্দির ও বুদ্ধ মঠ। এগুলির মধ্যে সবচেয়ে আকর্ষক নামড্রলিং মনাস্ট্রি। স্থানীয় মানুষের কাছে এই মন্দির গোল্ডেন বুদ্ধ বা নিংমোপা বুদ্ধ মন্দির নামেই বেশী পরিচিত। মন্দিরের চারপাশে সুদৃশ্য বাগান। মন্দিরের ৬০ ফুট  উচ্চতা ধ্যানস্ত বুদ্ধ মূর্তিটি সোনার পাতে মোড়া। দেওয়াল জুড়া বর্ণময় থাক্কা চিত্রকলা এই মন্দিরের শোভা বাড়িয়েছে। পাশেই বড় একটা রিমচোম মন্দির। এখানে আরো দুটি মানেস্ট্রি " সেরা যে " ও " সেরা মে " দেখা যাবে। এছাড়া দ্রষ্টব্য তাসি লুম্বো মানাস্ট্রি ও পাশে শরণার্রী তিব্বতীদের সুন্দর গ্রামটি অবশ্যই দেখা যাবে।
এবার সামনের দিকে তাকালেই দেখা যাবে পাহাড়ি নিসর্গের ছবি। কুর্গ জলার সিংভাগ অঞ্চল হচ্চে পাহাড়ি প্রকৃতির দখলে। উচ্চতা ১০০০ মিটার থেকে ১৭০০ মিটারের মধ্যে। কুর্গের পুরো নাম ছিলো কোডাগু। এর অর্থ হলো জঙ্গালিকীর্ণ পাহাড়ি অঞ্চল। এই জেলার মধ্য দিয়ে বহে চলেছে কাবেরি নদী, এর শাখা নদী হেমবতি ও হারাঙ্গি। ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে কফি আর নানা ধরনের মশলার বাগান। ইংরেজরা ১৯৩৪ সালে কফি চাষের সূচনা করেন। শীতের সময় এখানে ঘুরতে এলে গাছভরা কফি ফলের বাগান দেখা মিলবে। 
বেলকূপে থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে কুশলনগর। এখান থেকে মাদিকেরি শৈলশহর থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে। কুশলনগরে দেখা যাবে প্রকৃতি পর্যটন কেন্দ্র নিসর্গ ধাম। এটি কাবেরি নদীর ব-দ্বীপ। নদীর উপর ঝুলন্ত সেতু পেরিয়ে জঙ্গলে ছাওয়া দ্বীপে প্রবেশ করা যাবে। পথে অরণ্যক হেঁটে দেখা যাবে ডিয়ার পার্ক, ওয়াচ টাওয়ার, কাবেরি নদীঘাট।
কিছুটা এগিয়ে গেলে পাওয়া যাবে রাজা সিট ভিউ পয়েন্ট। পাহাড়ের গায়ে সাজানো পার্ক। রয়েছে মিউজিক্যাল ফাউন্টেন। রাজা টম্বের সমাধী সৌধ। সৌধগুলি শিল্প সম্মত। 
মাদিকেরি শহর থেকে ৮ কিলোমিটার দূরে আবে জলপ্রপাত। বন্ধুর পাহাড় অতিক্রম করে এখিনে যেতে হবে। কাবেরি নদী এখান থেকে ঝাপিয়ে পড়েছে।  চারপাশে আরণ্যক শোভা। জলপ্রপাতের নীচে অসাধারণ প্রাকৃতিক শোভা। জলপ্রপাতের মুখোমুখি দুটি পাহাড় থেকে ঝুলন্ত সেতু অত্যাশ্চর্য বলে মনে হবে। বর্ষায় জলপ্রপাতের সৌন্দর্য্য খুবই খোলতাই দেখায়। মাদিকেরি শহরে অনেক কফি, মশলা, মধু, ইউক্যালিপ্টাস বিক্রির দোকান আছে।
এবার মাদিকেরি ৩০ কিলোমিটার দূরে ভাগমন্ডলা, গ্রাম এলাকা এটা। এখানে রয়েছে কাবেরি,  সুজোতি, কণিকা নদীর মিলনস্থল। এই ত্রিবেনি সঙ্গমের কাছে ভাগন্ডেশ্বর শিব মন্দির। চোল রাজাদের অপূর্ব স্থাপত্যশৈলীর নিদর্শন পাওয়া যায়।
ছোট ছোট অনেক মন্দির এখানে দেখতে পাওয়া যাবে।
ভাগ মন্ডলা থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে তলকাবেরির, প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যের মাঝে এ এক পুণ্যস্থান। তালকাবেরীতে হ্মমগিরি পাহাড়ের কোল থেকে জন্ম নিয়েছে  কাবেরী নদী। কাবেরীর উৎস্যস্থলে রয়েছে একটি  রূপোর তৈরি ছোট্ট মন্দির। মন্দিরের সামনে পবিত্র জলকুন্ড। এখানে স্নান করে পূর্ণ্যাথিরা। পাহাড়ের সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠতে হবে। নদীর উৎস্যস্থল এটা। চারপাশটা সুন্দর করে বাঁধানো। এখানে গণেশ ও মহাদেবের মন্দির আছে। লোকবিশ্বাস, নদীর উৎসে বটবৃক্ষের নীচে অগস্ত্যা মুণি তপস্যা করেছিলেন। তালকাবারির অবস্থান প্রায় ১,৪০০ মিটার পাহাড়ি উচ্চতায়। প্রতি বছর অক্টোবর মাসে এখানে অনুষ্ঠিত হয় তুলাসক্রমণ উৎসব।কাবেরীর উৎস্য থেকে চরশো সিঁড়ি ভেঙ্গে ওঠা যায় ব্রক্ষগিরি পাহাড়ে। 
মাদিকেরি ঘুরে সোজা চলে আসুন মহীশুরে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ