Header Ads Widget

Responsive Advertisement

সিকিমের তিনচুলে , তাকদা দেখার ট্রাভেল গাইড

পশ্চিম সিকিমের ওখরা, হিলে ভার্সে হয়ে তিনচূলে ও তাকদা দেখতে যাওয়ার ইচ্ছে। নিউ  স্টেশন থেকে গাড়িতে করে আসতে হবে জোরথাঙে। তারপর ৬ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে ওখরাতে আসা যাবে। গাড়িতে দেখা যাবে পাহাড়ি গ্রাম আর রডোড্রেনডন ফুলের সমারোহ। 


ওখরাতে২ রাত কাটিয়ে চলে আসতে হবে ১০ কিলোমিটার গাড়িতে তারপর হাঁটা পথে ভার্সে পৌঁছান। হাঁটা পথ আসা যাওয়া মিলিয়ে ৯ কিলোমিটার মত। তারপর একদিন তাগদা কাটিয়ে তাগদা ও তিনচূলের সৌন্দর্য্য খুব কাছে থেকে উপভোগ করা যাবে। পাহাড় ঘোরার মজাটা একটু অন্যত্র ঘোরার আনন্দ থেকে অন্যরকমের। 
উত্তর সিকিমের ইয়ুমথাং যেমন নানা ফুলের জন্য বিখ্যাত, তেমনি ভার্সেও ফুলের জন্য বিখ্যাত। প্রায় সাড়ে ১০০০০ উঁচুত এই পাহাড়। মার্চের শেষ থেকে জুন অবধী নানান রকমের ফুল দেখতে পর্যটকরা আসে এখানে। ফুলের মেলা। বসন্ত কাল থেকে দেখা ২৪ প্রজাতির রডোড্রনডন ফুল। স্থানীয় ভাষায় এই ফুলের নাম গুরাস। এছাড়াও বিভান্ন প্রজাতির ফুল দেখা যায়।
হেমলক, ম্যাগনোলিয়া আছে অনেক অর্কিড। পথের মাঝে মাঝে ফুটে থাকে স্নেক ফুল, যা পথচারীকে ভয় দেখায়। 
ভার্সে যেতে হয় পায় হেঁটে। এই পথে শুধু রডোড্রনডন ছাড়া দেখতে পাবেন বাঁশ, ওক, পাইন গাছের ছায়ায় হেঁটেই যেতে হবে ৪ কিলোমিটার ভার্সেতে। গুরাসের মধুর লোভে চারিদিক থেকে পাখিরা জমায়েত হয়। ভার্সে মানে বর্ষা। এখানকার সূর্যোদয় খুবই মনোরম। আকাশ পরিস্কার থাকলে এখান থেকে সুন্দর ভাবে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যায়। শীতের সময় নানা পর্বতশৃঙ্গ থেকে বরফ গড়িয়ে সব কিছু ঢেকে দেয়। এই বনে রেডপন্ডা, ভাল্লুক, হরিণ ও নানা রকমের পাখি আছে।
ওখরেতে থাকবার জায়গা আছে। অনেকে হিলে এসে থাকেন। ভার্সেতে থাকার ভালো জায়গা হচ্ছে গুরাসকুঞ্জ। এছাড়া ভার্সতে তাঁবু খাটিয়ে থাকবার ব্যবস্থা আছে । ওখরে ভিলেজ ভার্সে ঘুরে আবার ফিরে আসতে হবে।
তিনচুলে দেখা বাকী, এখানে বন, পাহাড়, নদী ও কাঞ্চনজঙ্ঘার অপরূপ দৃশ্য যে কোন ভ্রমণ পিপাসু মানুষকে টেনে নেবে। তিনচুলে আর তাগদা বাংলার মানচিত্রে এক বিশেষ জায়গা করে নিয়েছে।
দার্জিলিং জেলার নতুন সব পর্যটন কেন্দ্রের মধ্যে তাকদা ক্যন্টনমেন্ট অল্প দিনের মধ্যে ভ্রমণ পিপাসু মানুষের কাছে বিশেষ জায়গা করে নিয়েছে। ভারত পরাধীনের সময় এই অঞ্চল ব্রিটিশ সেনার দখলে ছিল। 
এবার তিনচুলা গ্রাম দেখার জন্য। ১৯৯৬ সাল তিনচুলা গ্রাম স্বনির্ভর গ্রাম হিসাবে স্বীকৃত। এই তিনচুলা গ্রাম এখন ইকো ট্যুরিজম বলে জগত খ্যাত হয়েছে। এখান থেকে ২ কিলোমিটার দূরে মডেল ভিলেজ। এই গ্রাম দার্জিলিং শহর থেকে ২ কিলোমিটার দূরে আর শিলিগুড়ি থেকে  মাত্র ৬০ কিলোমিটার দূরে। এখানে ঘুরে দেখার মত জায়গাগুলি হল সাঁই মন্দির, তিনচুলা মনেস্ট্রি, সানরাইজ পয়েন্ট, দুরপিন দাঁড়া, গুম্ফা দাঁড়া ভিউপয়েন্ট, অর্গানিক চা বাগান এবং বড়ো এলাচের বাগান।  এখান থেকে খুব সূর্য্যোদয় দেখা যায়। যদি আকাশ পরিস্কার থাকে, তবে পর্বত শৃঙ্গগুলি দেখা যায়। এখানের মনেষ্ট্রিতে বসে বসে প্রকৃতির অন্যন্য শোভায় মোহিত হয়ে পড়তে বাধ্য। এবার সত্যি সত্যি ফেরার সময় হলো।
নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে ট্রেন ধরে ঘরে ফেরার পালা। খুব সকালে জল খাবার খেয়ে বেরতে যাবার আগে হোমস্টের মালিক খাদা পরিয়ে সংবর্ধনা দেওয়ার পর্বটাও উপভোগ্য এবং স্মরণীয় আর কি। এই অনুষ্ঠানটা সবারই খুব ভালো লাগবে। ফেরবার পথে দেখে নিতে পিরেন বিখ্যাত অর্কিড হাউস। ব্রিটিশদের তৈরী বাংলো দেখতে পাবেন। এবার মুগ্ধ হতে সামনের চা বাগান দেখে, বিখ্যাত রাঙ্গোলি, তিস্তা, গেইল চা বাগান। চা কেনাও যায় পান করাও যায় এই চা বাগানগুলিতে।
কী ভাবে পৌঁছান যাবে ঃ - হাওড়া বা শিয়ালদহ থেকে নিউ জলপাইগুড়ি। বাসে ধর্মতলা থেকে প্রচুর বাস আসে শিলিগুড়িতে। শিলিগুড়ি বা জলপাইগুড়ি থেকে ভাড়া করা গাড়িতে তকদা বা তিনচুলে আসা যায়। এখানে অনেক হোমস্টে আছে, পছন্দ মত উঠা যাবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ