রাবণ রাজার দেশ শ্রীলঙ্কা
এয়ারপোর্ট থেকে ক্যান্ডির দূরত্ব ১০০ কিলোমিটারের কিছু বেশি। আশ্চর্য যে, সিগন্যাল বা ট্রাফিক পুলিশের বালাই নেই। রাস্তায় আঁকা সাঙ্কেতিক নিয়ম মেনে দিব্যি ছোটে অজস্র গাড়ি। পৌঁছতে পৌঁছতে সন্ধে গড়ায়। গাড়ি পৌঁছল নেচার রিসর্টে।
পথেই পড়বে সুবিশাল টুথ রেলিক টেম্পল। শ্রীলঙ্কার অন্যতম পবিত্র ধর্মস্থান। গৌতম বুদ্ধের দাঁত এনে এই মন্দিরে স্থাপন করেছিলেন রাজকন্যা হেমামালী ও তার স্বামী যুবরাজ দন্ত। তার পরে কত যুদ্ধ! বিদেশি শক্তির লাল চোখ দেখেছে এই মাটি, তার চিহ্ন রয়েছে মন্দিরের আনাচকানাচে। রয়েছে তথাগতের বোধিবৃক্ষও। ইতিহাস বাদ দিলেও ভারী সুন্দর, নিপুণ ভাস্কর্যের সাক্ষী এই মন্দির।
সেখান থেকে মাত্র ন’মিনিট দূরেই পেরাডেনিয়ার রয়্যাল বটানিক্যাল গার্ডেন। প্রায় ১৪৭ একর জায়গা জুড়ে এই বাগানে রয়েছে তিনশোরও বেশি অর্কিড, অসংখ্য গাছ— সে এক সমারোহ। কতক্ষণ যে সেখানে কাটল!
পরদিন ক্যান্ডি ছেড়ে গাড়ি ছুটল নুয়েরাএলিয়ার দিকে। ভেলভেটের মতো চা বাগান ঘেরা পাকদণ্ডী পথ। দারুণ সুন্দর একটা ভিউ পয়েন্টে গাড়ি থামল। পাহাড়, ঝর্না আর চা বাগানের অদ্ভুত প্যানোরমিক ভিউ। রাস্তাতেই পড়ল রামবোডা ফলস। উঁচু পাহাড়ের মাথা থেকে লাফিয়ে নামছে জলরাশি। সেখান থেকে টি এস্টেটে। কত রকমের চা যে এখানে মেলে! চা তৈরির কারখানাও দেখা যাবে।
বুজস্নাত: নুয়েরাএলিয়ার চা বাগান
শৈলশহর নুয়েরাএলিয়াকে ‘লিটল ইংল্যান্ড’ বলা হয়। যে দিকে তাকানো যায় উঁকি মারছে পাহাড়, পাহাড়ের গা বেয়ে নামছে ঝর্না। পাশেই রেস কোর্স। একটু এগিয়ে ছোট মনাস্ট্রি। ওটাই আবার বাচ্চাদের স্কুল। শীত গায়ে মেখে স্কুলে যাচ্ছে একদল শিশু। প্রথম গন্তব্য সীতাএলিয়া। খাস রাবণসাম্রাজ্য। শোনা যায়, হরণের পরে সীতাকে এখানেই রেখে যান লঙ্কেশ্বর। ছোট্ট মন্দিরে লাফালাফি করছে অসংখ্য বানরসেনা। পাহাড়ি জঙ্গল থেকে উপচে পড়ছে ঝর্না, নীচে নদী। অশোকবনে থাকাকালীন এখানেই নাকি স্নান সারতেন সীতা। রয়েছে হনুমানের সুবিশাল পায়ের ছাপও।
হাতিদের স্নান: পিনাওয়ালা এলিফ্যান্ট অরফ্যানেজে
0 মন্তব্যসমূহ