সৈকত রানি গোয়া
ভারতবর্ষের
পশ্চিম উপকূলের এই ছোট রাজ্যের পশ্চিম প্রান্তে সুবিনস্ত বালুকাময় তট।
সারা পৃথিবী থেকে রোদ পিপাসুরা ছুটে আসেন এই সমুদ্র তটে।
সমুদ্রতীরে
বালুকাবেলার দর্শনের জন্য আকর্ষণীয় জায়গা হিসাবে গোয়াকে নির্বাচন করেছে
৬০ বছর আগের পরিচিত। ১৬০৪ খ্রিষ্টাব্দে ঢাচ বণিকরা গোয়ায় ঘাটি গেড়েছিলো।
তারপর ৭০ বছর পর পুর্তগীজরা গোয়া দখল করে। এখন গোয়া এখন স্বাধীন রাজ্য।
শুধু সড়ক ও সমুদ্রপথে যাতায়াত ছিল বতর্মান কোঙ্কন রেলওয়ে মাহারাষ্ট্রের
সাথে গোয়াকে যুক্ত করা হয়েছে। দক্ষিণে কর্নাটকের সাথে যুক্ত করা হয়েছে।
পাহাড় নদী অসংখ্য সুড়ঙ্গ অতিক্রম করে উচু সেতুর উপর দিয়ে এই রেলপথ গিয়েছে। সে পথের শোভা অতীব মনোরম।
কোঙ্কনকন্যা থেকে ট্রেনে মপুসা রোড স্টেশন নামলে কাছেই গোয়াকে পাওয়া যাবে। এখানে থেকে আনজুনা, বাগা, কালাঙ্গুটে ও ক্যান্ডোলমা সৈকত কাছাকাছি। একেবারে দক্ষিণ প্রান্তে ছোট টিলা। টিলার চূড়ায় এক প্রমোদ বিন্যাস। যা বিদেশী অতিথেদের জন্য বিশেষ পচ্ছন্দেরর। আরব সাগরের জলে সূর্য্যাস্ত খুবই দর্শনীয়।
সন্ধ্যার সমুদ্রের ঠান্ডা বাতাসে বি য়ার পানে মেতে ওঠেন প্রচুর তরুণ-তরুণীরা।
বাগা
বিচের দক্ষিণ প্রান্তে কালাঙ্গুটে বিচ বলে ডাক থাকলেও আসলে আড়াই কিলোমিটার
লম্বা এক তটরেখা। কালাঙ্গুট বিচে নজরদারি সতর্ক প্রশাসন থেকে। রয়েছে
সুরক্ষার জন্য
( Life Severs) কর্মীরা। জীপে করে
অনবরত টহল দিচ্ছে তারা। কেউ যদি বাহদুরি করে জলকেলি করতে চাইলে সঙ্গে সঙ্গে
অ্যারেস্ট করা হচ্ছে। বিচে কাগজ, জলের বোতল, পলিথিন ফেলা দন্ডনীয় অপরাধ।
পুরী বা দিঘার সৈকতে এসব ভাবাই যায় না। ইচ্ছে থাকলে সবকিছুই করে দেখান যায়।
উত্তর
গোয়ায় ২৫ টির বেশী সমুদ্র সৈকত আছে। তার মধ্যে খান দশেকের মত সৈকত
জনপ্রিয়তায় এগিয়ে। আনজুনা, বাগা, কালাঙ্গুট, ক্যন্ডোলিম ও সিঙ্গুরিম বিচ
উল্লেখযোগ্য। গোয়ার সবচেয়ে বড় নদী মান্ডভি। মধ্য গোয়ার রাজধানী পানাজী
শহরের বাঁ দিকে আরব সাগরে এসে মিসেছে।
মোহনার সাথে
পূর্তগিজদের তৈরি আগুয়াদা দূর্গ বিদ্যমান। সমুদ্রে প্রায় ২৫০ বছর ধরে
নজরদারির কাজ চলে আসছে। ওল্ড গোয়ায় পূর্তগিজ আমলের টালিতে ছাওয়া ঘর-বাড়ি।
মান্ডভি মোহনায় পুরাতন জেলখানা আর প্রাচীন গির্জা। পথের পাশে দু- দুটো
গির্জা। পূর্ব দিকের গির্জায় আছে সেন্ট ফ্রান্সিস জেভিয়ারের সমাধী। পশ্চিম
দিকে আছে জোড়া কাথিড্রল গির্জা। এল একদিকে পুরাতত্ব বিভাগের জাদুঘর রয়েছে।
পথের ধারে নানান রসনারও আয়োজন রয়েছে। সত্যি কথা বলতে গোয়ায় সামুদ্রিক
মাছের নানা রকমের পদ মেলে রেস্তরাগুলিতে। দাম একটূ বেশী হলেও কোন পর্যটক
স্বাদ নিতে একদম ভূল করেন না কিন্তু।
এবার পানাজি
শহরের পাশে মিরামার বিচ। আলাদা কিছু না শুধু বিচকে ঘিরে মানুষের সমাগম
সত্যই তাতপর্য্যপূর্ণ। আর মান্ডবি নদীতে রং বে রঙের অসংখ্য জলযান। এগুলো
হচ্ছে ভাসমান ক্যাসিনো। পাশে উজ্জ্বলতায় চকচক করছে বিজ্ঞাপনে মাধুর্য্য।
বোঝা গেল বিনোদনের কোন কার্পণ্য ক্যসিনোগুলিতে নেই। পানাজি শহরের
বিখ্যাৎ সাদা গির্জা না দেখলে ভ্রমণ অধরা হয়ে থাকবে। বলিউড সিনেমার দৌলতে
এই গির্জার নাম ছড়িয়ে পড়েছে।
পশ্চিম গোয়া দেখতে গেলে পৃথক পরিকল্পনা প্রয়োজন।
তাই ফিরতে হলেও জেনে নিতে হবে বৃত্তান্ত।
কি
ভাবে পৌঁছাবেন ঃ--- গোয়া যাবার আগে মুম্বাই দেখে নিতে হবে তাই হাওড়া থেকে
মুম্বাই মেল, গীতিঞ্জলি এক্সপ্রেস, হাওড়া-লোকমাণ্য সুপার ফার্ষ্ট
এক্সপ্রেস বিভিন্ন ট্রেনে মুম্বাই চলে আসতে হবে। মুম্বাই ছত্রপতি শিবাজী
ট্রামন্যাল থেকে কোঙ্কনকন্যা এক্সপ্রেস ট্রেনে গোয়া আসতে হবে। মুম্বাই -
গোয়া বাস সার্ভিস অনেকদিনের পুরাতন। কিন্তু বর্তমানে কোঙ্কনা এক্সপ্রসে
গোয়ায় ভ্রমণে মজাই আলাদা। পথে অসংখ্য সুড়ঙ্গ। দমদম এয়ারপোর্ট থেকে বিমানে
সরাসরি মুম্বাই অথবা গোয়ায় পৌঁছান যায়।
ডিসেম্বর জানুয়ারিতে হোটেলের ভাড়া খুব চড়া থাকে। গোয়ায় সারা বছরই যাওয়া যায়। তবে এখানে শীতের নাম গন্ধ বলে কিছু নাই।
0 মন্তব্যসমূহ