Header Ads Widget

Responsive Advertisement

বাঘের ঘর বান্ধবগড় ও কানহা জঙ্গল ঘুরে আসার পূর্ণ গাইড

 বাঘের ঘর বান্ধবগড় ও কানহা জঙ্গল ঘুরে আসার পূর্ণ গাইড ঃ--



মধ‍্যপ্রদেশ মানে গহীন জঙ্গল কথা। কানহা ও বান্ধবগড়ে এত জন্তু জানোয়ারের সাক্ষাৎ ঘন ঘন আর কোথাও মেলে না। বাঘেদের ঘর বান্ধব গড়। কলকাতা থেকে ১৪০০ কিলোমিটার মিটার দূরে বান্ধবগড়। কলকাতা - ধানাবাদ - আরঙ্গবাদ - অম্বিকাপুর। এখান থেকে জব্বলপুর হয়ে কানহা ফরেষ্ট। আবার কলকাতা - রাঁচি - হয়ে অম্বিকাপুর। জব্বলপুর হয়ে কানহা ফরেষ্ট। আরঙ্গবাদ হয়েই যাওয়া শ্রেয়। 
ছত্রিশগড় রাজ‍্যের সুরগুঞ্জা জেলার এক শহর এই অম্বিকাপুর। কলকাতা থেকে দূরত্ব ৭৮০ কিলোমিটার। সময় লাগে কম বেশী ১৪ ঘন্টা।
৯৪০ বর্গ কিলোমিটার জায়গা নিয়ে কানহা জাতীয় উদ‍্যান। বিন্ধ ও সাতপুরা পাহাড় জুড়েই রেয়েছে কানহা। বেশকিছু নদ নদী এই জঙ্গলে আপন খেয়ালে ঘুরে ফিরে প্রবাহিত হয়েছে। তবে দু'টি নদী হ‍্যাল ও বানজারা জঙ্গল দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। ভারতের প্রধান জাতীয় উদ‍্যান উত্তরাখন্ডের জিম করবেট জাতীয় উদ‍্যানের আগের নাম ছিল হ‍্যালি ন‍্যাশনাল পার্ক। ব্রিটিশ সরকার ১৯৩৬ সালে জিম করবেট নামে উদ‍্যানের নাম করণ করে। পৃথিবীর প্রথম জাতীয় উদ‍্যান আমেরিকার ইয়েলস্টোন ন‍্যাশনাল ফরেষ্ট। কুমায়নের জঙ্গল  দেখে যেমন জিম করবেট প্রেমে পড়ে যান, তেমনি কানহার প্রেমে পড়েন রুডইয়ার্ড কিপলিং। ভারতবর্ষে ১০৪ টা জাতীয় উদ‍্যান আছে। ১২৩% জমি নিয়ে এই জাতীয় উদ‍্যানগুলি। কানহা ও বান্ধব গড় মূলত বাঘেদের রাজত্ব বলা চলে। ১৯৭২  সালে ভারতে বন‍্যপ্রাণী রক্ষা আইন ও ব‍্যাঘ্র সংরক্ষণ আইন চালু করা হয়। 
কানহা জঙ্গলে কম বেশী ১১৮  টি ডোরাকাটা  বাঘ পাওয়া যাবে। এ ছাড়া চিতল হরিণ, বাইসন,  ভাল্লুক, ও বন‍্য শুয়োর আছে। অজশ্র পাখির কলতন মাতিয়ে রাখে সারাক্ষণ। 
কানহা এক ভয়ঙ্কর সুন্দর গা ছম ছম করা জঙ্গল। বড় বড় ঘাসে ঢাকা সবুজাভ সতেজ জঙ্গল দেখলে মন প্রান জুড়িয়ে যায়। জঙ্গলের প্রবেশ পথের সামনে ছোট বড় নানা বাজেটের হোটেল পাওয়া যাবে। সকাল ৬ টা থেকে দুপুর ১২ টা আবার ৩ টা থেকে সন্ধ‍্যা ৬ টা অবধী জঙ্গল সাফারী  করা যায়। অক্টোবর থেকে জুন মাস অবধী জঙ্গল খোলা থাকে।
                       বান্ধবগড়ের বন্ধু 
বান্ধবগড়ে রূপ অসাধরণ। আর এর গুণের তুলনা অপরিসীম। টালা গেট পাশ করে ভিতরে ঘন জঙ্গল। প্রতি ১ কিলোমিটার অন্তর একটা করে বাঘ থাকে। ৭০০ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে এই জঙ্গল। ১৯৬৮ সালে জাতীয় উদ‍্যান হয় আর ১৯৯৩ সালে বাঘেদের আবাস হিসাবে ঘোষিত হয়। এখানে প্রচুর লেপার্ড ও নানান প্রজাতির হরিণ আছে। সাদা বাঘ এখানে প্রথম দেখা যায়। ময়ূর আছে প্রচুর। মধ‍্যপ্রদেশ সরকার পর্যটন শিল্প থেকে প্রচুর আয় করেন। স্পঞ্জ মারশুম, কাট মাশরুম, হার্ড মাশরুম, রেড মাশরুম, গোল্ডেন নামের মাশুরুম বিদেশে রপ্তানি থেকে প্রচুর আয় আছে। ময়ূরের পেখমের মাথা, ময়ূরের পিকক মুনও বিদেশী মুদ্রা আনে। পোস্তা ও আফিম গাছের রস রপ্তানি হয়। আদ‍্য কথা জঙ্গল আমাদের বিদেশী মুদ্রা এনে দেয়। 
সাতপুরা পাহাড়ের কোলে এই বান্ধবগড় ন‍্যাশনাল পার্ক। পাহাড়ের উপর প্রায় ৪০ / ৫০ লম্বা বিষ্ণুদেব ঘুমিয়ে আছে। তার পাশেই শিবলিঙ্গ। এখানে একটা দূর্গ ছিল, এখন তার ধ্বংসাবশেষ রয়েছে। কথিত আছে, লঙ্কার উপর নজর রাখার জন‍্য লক্ষ্মণ মানে বান্ধবকে দায়িত্ব দিয়েছিল। সেই থেকে এই এলাকার নাম বান্ধবগড়। জঙ্গলের মধ‍্যে আছে প্রাচীন সব গুহা। দশ শতকে এখানে নির্মাণ হয় একটি দূর্গ। " বড়ি গুম্ফা" । মধ‍্যযুগে সৈনদের থাকবার জায়গা। বিষ্ণু এখানে শায়িত আছে। নীচে দিয়ে বহে চলছে  চরণ গঙ্গা। অপূর্ব নৈশর্গিক পরিবশে।
যারা ওয়ার্ল্ড লাইফ ফটোগ্রাফি করতে চান তাদের কাছে কানহা ও বান্ধবগড় আদর্শস্থানীয়। 

কী ভাবে যাবেন ঃ-  হাওড়া থেকে ট্রেনে জব্বলপুর। এখান থেকে কানহা ফরেষ্ট। গাড়িতে ১৪০০ কিলোমিটার। কলকাতা - খড়্গপুর - জামশেদপুর - রাঁচি হয়ে জব্বলপুর। এখান থেকে কানহা ও বান্ধবগড়।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ