Header Ads Widget

Responsive Advertisement

স্বাধীতার ৭৫ তম বর্ষ- স্মৃতি রক্ষায় কলকাতায় ৩ টি অনন‍্য ভবন দেখতে আসুন

 স্বাধীতার ৭৫ তম বর্ষ- স্মৃতি রক্ষায় কলকাতায়  ৩ টি অনন‍্য ভবন দেখতে আসুন...ঃ-

স্বাধীনতার ৭৫ বর্ষ  উপলক্ষ্যে ভারতবর্ষের দিকে দিকে অনেক গ্রন্থাগার, সরকারী সংগ্রহশালা,  নানান স্মরক কেন্দ্র ও বিপ্লবীদের স্মৃতি রক্ষায় নানা ভবন। এর মধ‍্যে উল্লখযোগ‍্য ৩ টি ভবন একটু জেনে নিই। 



 * * *  মহাজাতি সদন * * *

১৯৩৮ সালে ভবানিপুরে সুভাষচন্দ্র বসু তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের সঙ্গে নিজের বাড়িতে বসে কলকাতায় এক ছাতের তলায় অনেক বিষয়  নিয়ে আলোচনা ও চর্চার জন‍্য এক স্থায়ী কেন্দ্র গড়ে তোলার কথা বলেন। শহরের বিশিষ্ট জন সহমত পোষণ করেন। বড় বাজারের কাছে সেন্ট্রাল এভিনিউ-এর উপর কলকাতা কর্পোরেশনের অব‍্যবহৃত ৩৮ কাঠা জমি ১ টাকা লিজের বিনিময়ে উদ‍্যোক্তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। উৎসহি সুভাষচন্দ্র রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে নাম করণের জন‍্য অনুরোধ করেন। বিশ্বকবি নাম দেন মহাজাতি সদন।  ১৯৩৯ সালের ১৯ আগষ্ট সুভাষ চন্দ্র বসুকে পাশে বসিয়ে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ মহাজাতি সদনের ভিত্তি প্রস্তরের উদ্ভোধন করেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৫৮ সালের ১৮ ই আগষ্ট আনুষ্ঠানিক ভাবে মহাজাতির উদ্ভোধন হয়। শান্তিনিকেতনের শিল্পী মহাজাতি সদনের চারচালা ভবনের অভিনব স্থাপত‍্য শৈলী এখনো সবাইকে মুগ্ধ করে। ঢোকার মুখে দুই দিকে সুভাষ চন্দ্র ও রবীন্দ্রনাথের দন্ডায়মান মূর্তি। ডানদিকে ঘুরলেই দেখা যাবে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের মডেলের মধ‍্য দিয়ে স্বাধীনতা,আন্দোলনের নানা কাহিনী। বাঁ পাশে মহাজাতি সদনের প্রেক্ষাগৃহে ১২০০ আসন বিশিষ্ট আধুনিক মঞ্চের সব ধরনের সুযোগ সুবিধা রয়েছে।
দোতলায় দেখা যাবে স্বাধীনতা আন্দোলনে সচিত্র প্রদর্শনী। প্রদর্শনী কক্ষের উপর তলে রেয়েছে ৭২ টি বড় বড় সাদা কালো ছবি দিয়ে সাজিয়ে তোলা হয়েছে ' নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু ও স্বাধীনতা সংগ্রাম ' বিষয়ে কর্মশালা। অভিনব এই প্রদর্শনী দেখলে নেতাজী সম্বন্ধে অনেক অনন‍্য কীর্তিকথা সহজেই স্পষ্ট হয়ে ওঠে। 
চারতলা বাড়ির ভেতরের দেওয়ালে ৫৫৫ জন মনীষীর, স্বাধীনতা সংগ্রামী ও বিশিষ্ট মানুষের আলোকচিত্র বাঁধাই করে টাঙানো আছে। 
দীর্ঘকাল যাবৎ রবীন্দ্রনাথ, সুভাষচন্দ্রের জন্মদিনের পাশাপাশি ১৯ শে আগষ্ট মহজাতি সদনের জন্মদিন পালন করা হয়।

 * * * * সূর্য‍্য সেন ভবন * * * *

চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুন্ঠনের বিপ্লবী নেতৃত্ব মাষ্টারদা সূর্য‍্য সেনের স্থায়ী স্মৃতি রক্ষার জন‍্য ওই আন্দোলনের আরেক বীর সৈনিক বিপ্লবী গণেশ ঘোষের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় আটের দশকে দক্ষিণ কলকাতার যাদবপুর থানার কাছে প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডে বিপ্লব ও বিপ্লবী আন্দোলনের নানান কীর্তির জন‍্য অনন‍্য পরিচয়বাহি স্থান 'সূর্য‍্য সেন ভবন'।
ভবনের মূল প্রবেশ ঢোকার বাইরেই বাঁ পাশে রয়েছে সূর্য‍্য সেন, অম্বিকা চক্রবর্তী ও গণেশ ঘোষের তিনটি আবক্ষ মূর্তি। ভেতরের ডান দিকে রয়েছে দেওয়াল সাজানো বিপ্লবীদের বাঁধানো ছবি। 
২০০ আসনের বিশাল আধুনিক প্রেক্ষাগৃহ।
উত্তরোত্তর বেড়ে ওঠা চট্টগ্রাম বিপ্লবী বীর শহীদ মাষ্টারদা সূর্য‍্য সেনের নামঙ্কিত অনন‍্য এই কেন্দ্রে ' সুর্য‍্য সেন ভবন '।

* * * * প্রজ্ঞানন্দ ভবন * * * *

কলকাতা মৌলালির মোড়ের পূর্ব দিকে রস্তার পাশে সাতের দশকের শেষে গড়ে ওঠে বিশিষ্ট বিপ্লবী স্বামী প্রজ্ঞানন্দের নামে প্রজ্ঞানন্দ ভবন। তাঁর প্রকৃত নাম ছিল সতীশচন্দ্র মুখার্জী। বরিশালের স্বাধীনতার জন‍্য সশস্ত্র লড়াইতে ছিলেন তিনি। পরে জোতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ‍্যায়ের সঙ্গেও যৌথভাবে কাজ করেন। জীবনের শেষ দিকে বারানসীতে শঙ্কর মঠ গড়ে তোলেন। সেই সময় তিনি প্রজ্ঞানন্দ সরস্বতী  প্রেস। কলকাতায় তাঁর অনুগামীদের ঐকান্তিক চেষ্টায় এবং আর্থিক সহায়তায় গড়ে ওঠে প্রজ্ঞানন্দ ভবন, যা কলকাতার অন‍্যতম গর্ব।  তিন তলা এই ভবনে স্বাধীনতা আন্দোলন ও বিপ্লবীদের আলোকচিত্রের স্থায়ী প্রদর্শনী ছাড়াও রয়েছে ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন, বিপ্লবীদের স্মৃতি কথা। মনিষীদের জীবনীসহ নির্বাচিত বাছাই করা উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ সম্ভার। এর পাশাপাশি বিভিন্ন সময়ে অনেক স্বাধীনতা সংগ্রামের বই পুস্তক গ্রন্থ, সাময়িকী, পত্র পত্রিকার সংখ‍্যা সযত্নে সাজান রয়েছে। পাশাপাশি  আলোচনা সভা, সভা সমিতির জন‍্য অডিটরিয়াম বা প্রেক্ষাগৃহ রেয়েছে।  এ ছাড়া    বারাকপুরে গান্ধি সংগ্রহশালায় বিশাল আলোকচিত্রের সাহায‍্যে গান্ধীজীর জীবন ও তাঁর স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাস  লিপিবদ্ধ আছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ