Header Ads Widget

Responsive Advertisement

দেখে আসুন- কৃষ্ণনগর ও মহিষাদল রাজবাড়ীর দুর্গা পুজো - বিস্তারিত জেনে নিন

 কৃষ্ণনগর ও মহিষাদল রাজবাড়ীর দুর্গা পুজো  ঃ-



মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র ও রসিকবর গোপাল ভাঁড়ের জন্য বিখ্যাৎ কৃষ্ণচন্দ্রের প্রাচীন নাম রেউই। নদীয়া রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা ভবানন্দ মজুমদার রাজধানী ছিল মাটিয়ারীতে। তাঁর পৌত্র রাঘব রায়ের আমলে রাজধানী রেউয়ে স্থানন্তরিত হলেও কৃষ্ণনগরের নামকরণ হয় রাঘব পুত্র রুদ্র রায়ের সময়ে।
১৯৮৩ খ্রিষ্টাব্দে রুদ্র রায় দুর্গা পূজার প্রচলন করেন। আজও সেই ধারা বহন করে চলেছে বর্তমান রাজ পরিবার।
রাজবাড়িতে সাধারণের প্রবেশ নিশেধ। বছরের তিনটি উৎসবে অর্থাৎ-- দূর্গাপূজা, জগদ্ধাত্রী পূজা ও বৈশাখের বারোদোল মেলার সময় জন সাধারণের প্রবেশের অনুমতি মেলে। 
বলা চলে রাজা - প্রজাদের কল্যাণের জন্য রাজা রাজা রুদ্র রায়ের উদ্যোগে দূর্গা পূজা প্রবর্তন হয়। দূর্গার নাম রাজ রাজেশ্বরী। তিনি সুখ-সমৃদ্ধির দেবী। ঘোড়া মুখো সিংহের উপর দূর্গা। প্রতিপদে হোম শুরু হয়। চলে নবমী পর্যন্ত। 
রাজ বাড়ির নাট মন্দিরে অনুষ্ঠিত হয় দূর্গা পূজা। নাট মন্দিরের স্থাপত্য, খিলান, থাম ও অলিন্দ চোখে পড়ার মত। দেখা যাবে সুদৃশ্য পঙ্খের কারুকার্য। 
আগে পুজোর সময় কামান দাগা হতো এবং বিষর্জনে ওড়ানো হতো নীলকন্ঠ পাখি। এখন এসব বন্ধ। পুজোর অন্যান্য আচার অনুষ্ঠান ঠিকই চলছে।  
রাজবাড়ি পূজো দেখার সাথে সাথে অন্য নীল দূর্গাবাড়ি ও অন্যান্য পূজোগুলি দেখে নেওয়া যাবে। কৃষ্ণনগরে ১০০ টার অধিক দূর্গা পূজা হয়। 
এছাড়া ঘুরে দেখা যাবে ঘূর্ণি পুতুল পট্টি। 
আনন্দময়ী কালীবাড়ি, ক্যাথিড্রাল চার্চ,  পাবলিক লাইব্রেরী,নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর বাড়ি।
কলকাতা থেকে কৃষ্ণনগরে যাবার বহু ট্রেন পাওয়া যায়। NH34 কৃষ্ণনগরের উপর দিয়ে যায়। 

মহিষাদল রাজবাড়ির পুজো ঃ-- 
পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদল রাজবাড়ির দূর্গা পুজো প্রায় ২৫০ বছরের প্রাচীন। রাজা আনন্দদয়াল উপাধ্যয়ের মৃত্যুর পর আনুমাণিক ১৭৭৮ খ্রিষ্টাব্দে রানী জানকী দেবী দুর্গা পুজোর প্রচলন করেন। রাজ পরিবার বৃদ্ধি হওয়ার সাথে সাথে তিনটি রাজ প্রাসাদ গড়ে ওঠে-- রঙ্গিনাবাসন, লালকুঠি ও ফুলবাগ। রাজবাড়ির পুজো হয় 
রঙ্গিনাবাসনের পাশে রাজ প্রাসাদে। রথের পর থেকে ঠাকুর দালানে দুর্গা প্রতিমা তৈরীর কাজ শুরু হয়ে যায়। ডাকের সাজের সাবেকি প্রতিমা। পুজো আরাম্ভের সময় থেকে একটি শিল্পী পরিবারই মুর্তি গড়ার কাজ করে আসছেন। পুজো হয় বৈষ্ণব মতে। মহালয়ার পরদিন থেকে রাজবাড়ির কূলো দেবতা মদন গোপাল জিউর মন্দির লাগোয়া পুকুর থেকে ঘট উত্তোলনের মধ্য দিয়ে পুজোর সূচনা হয়। অতিতে এই রাজবাড়িতে একমন চালের ভোগ হত। পরে প্রতিদিন একমন করে ভোগের চাল বাড়তে থাকে। এই ভাবে নবমীর দিন নয়মন চালের ভোগ রান্না হতো। সন্ধি পুজোর আগে দাগা হতো কামান। দশমীর দিন রূপনারয়ণের জলে বিষর্জন দেওয়া হতো। বর্তমানে রাজবাড়ি লাগোয়া দিঘিতে বিষর্জন হয়। তবে জাকজমক আনন্দফূর্তি আগের মতই বহাল আছে। শুধু রাজ পরিবার নয় আশে পাশের গ্রামবাসীগণও এই উৎসবে অংশ নেন। 
এ বছরে সাড়ম্বরে পুজো হবে। রীতি মেনে অতিথি অ্যাপায়ণের ব্যাবস্থা আছে। তবে করোনা বিধি মাণ্য করে প্রতিমা দর্শন করা যাবে। স্যানেটাইজের ব্যবস্থা থাকবে। মাক্সের ব্যবহার বাধ্যতা মূলক। 
পুজোর কটা দিন রাজবাড়ি থেকে ঐতিহ্যমন্ডিত পুজো প্রত্যক্ষ করা যেতে পারা যাবে। মহিষাদল রাজবাড়িতে থাকবার ব্যবস্থা আছে। রাত্রি বাস না করতে চাইলেও সন্ধ্যের আগে অবধি ভাড়ায় ঘর পাওয়া যাবে। বুকিং-এর জন্য ফোন-৯৮৩০২-৭৫৯২৮
কী ভাবে পৌঁছাবন ঃ- কলকাতা থেকে মহিষাদল রাজবাড়ি দূরত্ব ১১০ কিলোমিটার। গাড়িতে দুই / আড়াই ঘন্টা সময় লাগবে। কলকাতা থেকে বোম্বে রোড ধরে কোলাঘাট রোড ধরে নন্দকুমার মোড় এসে সেখান থেকে ৮ কিলোমিটার গেলে কাপাসিয়া মোড়। কাপাসিয়া মোড়ের একশ গজ আগে বাঁ দিকের রাস্তা ধরে গেলে পাঁচ কিলোমিটার গেলেই মহিষাদল রাজবাড়ি।
রাজবাড়িতে থাকবার আছে-- ৬ জনের স্যুইটের ভাড়া ৮০০০ টাকা, ৩ শয্যার ভাড়া ৬০০০ টাকা। ভাড়ার সঙ্গে ব্রেকফাষ্টের ভাড়া ধরা আছে।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ