কয়েকটি জায়গার সুলুক সন্ধান।
দুনিয়া অনেকটা বদলে গিয়েছে। এখন শহরের ভিড়ে নয়, প্রকৃতির মাঝে বেড়াতে যেতে চাইছেন অনেক মানুষ। চাইছেন এমন কোথাও যেতে, যেখানে কিছুটা ফাঁকায় ফাঁকায় ঘুরে আসার সুযোগ রয়েছে। পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে জনপ্রিয় না হলেও ভারতে এমন বহু জায়গা রয়েছে, যা নামজাদা পর্যটনকেন্দ্রগুলিকে প্রতিযোগিতায় হারিয়ে দিতে পারে। অতিমারির সময়ে তেমনই অচেনা কয়েকটি জায়গার সন্ধান রইল পাঠকদের।
বাংলার গ্রান্ড ক্যানিয়ন গনগনি ,পঃ মেদিনীপুর
শীলাবতি নদীর গতি পরিবর্তনের ফল পরিত্যক্ত স্থানে গর্জ বা খাদ বছরের পর বছর পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে থাকার ফলে সেখানে প্রাকৃতিক নিয়মে জল আলো বাতাসের সংস্পর্শে এসে ক্ষয়কার্যের এক অপূর্ব নকশাযুক্ত শিল্পকলার সৃষ্টি হয়েছে। যার স্থানীয় নাম গনগন ডাঙ্গা বা গনগনি খোলা। বিষ্ণুপুর থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে জয়পুর অরণ্য পাশেই গনগনি। গনগনি বা গ্রান্ড ক্যানিয়ন অব ওয়েষ্ট বেঙ্গল। সাইড সিন করে নিতে পারেন রাসমঞ্চ, বিষ্ণুপুর।
কি ভাবে যাবেন ঃ হাওড়া থেকে ট্রেনে পুরুলিয়া বা বাঁকুড়া। এখান থেকে জয়পুর ফরেষ্ট পাশেই গনগনি। গাড়িতেও আসা যাবে।
চৌকোরি, উত্তরাখণ্ড
চৌকোরি, উত্তরাখণ্ড: হিমালয়ের কোলে এই ছোট্ট শহর এখনও পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে বিশেষ নাম করেনি। কিন্তু নন্দাদেবী শৃঙ্গের মুখোমুখি এই ছোট্ট জনপদটি যে কোনও পর্যটকের মন ভাল করে দিতে পারে। কয়েক দিন নিরিবিলিতে যাঁরা কাটাতে চান, বেছে নিতে পারেন এই ছোট্ট শহর।
ভারকালা, কেরল
ভারকালা, কেরল: পাহাড়ের চেয়ে সমুদ্র বেশি পছন্দ? কিন্তু ভাবেন সমুদ্র মানেই ভিড়? এই ধারণা ভেঙে দিতে পারে কেরলের ভারকালা সৈকত। নিরিবিলিতে কয়েকটি দিন কাটানোর জন্য একেবারে আদর্শ।
জিরো উপত্যকা, অরুণাচল প্রদেশ
জিরো উপত্যকা, অরুণাচল প্রদেশ: হালে পর্যটকদের কাছে খুব জনপ্রিয় হয়েছে অরুণাচল প্রদেশ। ফলে অতিমারির আগে পর্যন্ত প্রতি বছরই একটু একটু করে পর্যটকের সংখ্যা বেড়েছে এই রাজ্যে। কিন্তু তার পরেও এমন কিছু জায়গা রয়ে গিয়েছে, যেগুলি এখনও সে ভাবে জনপ্রিয় নয়। তেমনই জায়গা জিরো উপত্যকা। ছোট্টগ্রাম, তার সামনে বিস্তৃত সবুজ উপত্যকা, দু’পাশে পাহাড়। অতিমারির সময়ে ক’দিন হাওয়া বদল করে আসার আদর্শ
জাওয়াই, রাজস্থান
জাওয়াই, রাজস্থান: রাজস্থান বললেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে দেশি এবং বিদেশি পর্যটকদের ভিড়। কিন্তু জাওয়াই নদীর ধারের ছোট্ট গ্রামটি সেই ভিড় থেকে অনেক দূরে। যাঁরা বন্যপ্রাণী ভালবাসেন, মূলত তাঁরাই যান এখানে। সেই সংখ্যাও হাতে গোনা। অতিমারিকালে এমন জায়গা নিরাপদ ভ্রমণের জন্য একেবারে আদর্শ স্থান।
জয়পুর ,বাঁকুড়া
বিষ্ণুপুর থেকে ১৪ কিলোমিটার দুরে শাল, সেগুন, পিয়াল, কুষুম, মহুয়ায় ঘেরা আপরূপা অরণ্য এক। অরণ্যের মাঝে আছে রিসর্ট বনলতা। রিসর্ট থেকে জঙ্গল সাফারির ব্যাবস্থা আছে। সাফারিতে খরচ ৫০০ টাকা মাত্র। জঙ্গল ঘুরবার জন্য গাইড পাবেন ২০০ টাকায়। লোকাল সাড সিন করা যায়, যেমন- বিষ্ণুপুর, জয়রামবাটি, কামারপুকুর ইত্যাদি। এখানকার বালুচুরি শাড়ি ও বিষ্ণুপুরি সিল্কের খুব কদর। টেরাকোটা ও ডোকরার কাজের শিল্প সামগ্রী সংগ্রহ করতে পারা যাবে।
কি ভাবে যাবেন ঃ হাওড়া থেকে পুরুলিয়া স্পেশাল ট্রেনে পুরুলিয়া। বিষ্ণুপুর নামতে হবে। এখান থেকে জয়পুর ১৪ কিলোমিটার। বা বাঁকুড়ায় নেমেও জয়পুরে আসা যাবে।
সিকিমের ইয়াকসাম
নরবুগাংয়ের নতুন নাম হইল ইয়াকসাম। যার অর্থ হইল তিন লামার মিলনস্থল।
এখন ইয়াকসাম অত্যাধুনিক পর্যটন কেন্দ্র। এখানে ট্রেকিং রুট। সুন্দর ছিমছাম গ্রাম এই ইয়াকসাম। চারিদিক উঁচু পাহাড় দিয়ে ঘেরা। বৌদ্ধ ধর্ম অধ্যসুত এলাকা। বৌদ্ধ প্রার্থনা পতাকা, বৌদ্ধ প্রার্থনা গৃহ, ও বৌদ্ধ ধর্মচক্র দেখা যাবে। কিছুদূর এগিয়ে নরবুগাংর ঐতিহাসিক সিংহাসন। সিংহাসনটি চারিদিকে বেড়া দিয়ে ঘেরা। সিংহাসনের পাশেই ৫০০ বছরের পুরাতন পাইন গাছ। প্রবেশ মূল্য ২০ টাকা মাত্র। ইয়াকসামের দ্বিতীয় ঐতিহাসিক স্থানটি হল দুবদি গুম্ফা। এটি সিকিমের সবচেয়ে প্রাচিনতম গুম্ফা।
কি ভাবে যাবেন ঃ কলকাতা স্টেশন থেকে NGP তারপর গাড়িতে পেলিং। পেলিং থেকে ইয়াকসাম।
0 মন্তব্যসমূহ