Header Ads Widget

Responsive Advertisement

একদিনের ভ্রমণে পাণিহাট




 

টুক করে টাকি

গত কাল আমরা শিয়ালদহ থেকে সকাল 7 টা 40 এর হাসনাবাদ লোকালে চড়ে বসলাম গন্তব্য উত্তর 24 পরগনা জেলার টাকি (ট্রেন ভাড়া কুড়ি টাকা) 9:45 নাগাদ আমরা টাকিতে এসে পৌছালাম আগে থেকেই Subhasini Guest House আমাদের থাকার ব্যবস্থা করা ছিল তাই স্টেশন থেকে বেরিয়ে টোটো করে গেস্ট হাউসে এসে পৌছালাম (টোটো ভাড়া নিল প্রত্যেকের কুড়ি টাকা করে) সকাল থেকে কিছু খাওয়া হয়নি তাই খুব খিদে পেয়েছিল গেস্ট হাউসে এসে ব্রেকফাস্টে লুচি তরকারি এবং চা খেলাম ব্রেকফাস্ট করে বেরিয়ে পড়লাম টাকি শহর ঘুরতে টোটো ভাড়া করে প্রথমেই গেলাম জেনারেল শংকর রায় চৌধুরীর পৈতৃক বাড়ি সেখানে থেকে গেলাম যেখানে বিসর্জন সিনেমার শুটিং হয়েছিল সেই বাড়িটি দেখতে তারপর গেলাম গোলপাতার জঙ্গল, এখানে বলে রাখি গোলপাতার (যাকে মিনি সুন্দরবন বলে)জঙ্গলে যেতে হলে যেকোনো একটি সচিত্র পরিচয় পত্র আনতে হয় এবং তা বিএসএফের কাছে জমা দিয়ে তারপরই গোলপাতার জঙ্গল যাওয়া যায় আমরা আমাদের আধার কার্ড জমা রেখে আস্তে আস্তে গোলপাতা জঙ্গলের দিকে এগোলাম, গোলপাতা জঙ্গলে ঢুকতে হলে জনপ্রতি 10 টাকা করে টিকিট কাটতে হয় গোলপাতা জঙ্গল থেকে ইছামতীর উল্টোদিকে বাংলাদেশ পরিষ্কার দেখা যায় ওখানে কিছুক্ষণ কাটিয়ে আমরা আবার টোটো করে বেরিয়ে পড়লাম জোড়া শিবমন্দির দেখতে। এরপর ইছামতির তীরে আরো কিছুক্ষণ ঘুরে আমরা হোটেলে ফিরে এসে দুপুরের খাবার খেয়ে নিলাম খাবার পর খানিকটা বিশ্রাম নিয়ে বিকেলে ইছামতীর তীর ধরে বেড়াতে লাগলাম। এরপর একটি স্থানীয় দোকানে চা এবং সিঙ্গারা খেয়ে ইছামতির ধারে এসে বসে পড়লাম রাতে ডাল এঁচোড়ের তরকারি আর মুরগির মাংস সহযোগে পেট ভরে খেলাম

আজ ভোর ভোর ঘুম থেকে উঠে চা খেয়ে ইছামতীর তীর ধরে বেড়াতে লাগলাম। মন না চাইলেও এবার ফেরার পালা তাই তাড়াতাড়ি হোটেলে ফিরে এলাম এবং লুচি আলুর তরকারি রসগোল্লা সহযোগে ব্রেকফাস্ট সেরে নিলাম হোটেল থেকে টোটো চেপে টাকি স্টেশন এবং সেখান থেকে 11:34 এর শিয়ালদা লোকাল ধরে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হলাম

 

একদিনের ভ্রমণে পাণিহাটি

*************************

আমরা ভ্রমণ প্রিয় তাই প্রখর গরমে, ঠান্ডায় বা বর্ষাতে আমাদের ভ্রমণ থেমে থাকে না। আমরা জন ভ্রমণ বন্ধু ১৭//২২ (রবিবার) শিয়ালদহ ব্যারাকপুর শাখার ট্রেন ধরে চলে গিয়েছিলাম সোদপুর স্টেশনে। সোদপুর স্টেশনের বাইরে থেকে অটো ধরে ১০ টাকা অটো ভাড়ায় চলে গিয়েছিলাম পানিহাটি ফেরিঘাট। পানিহাটি জায়গাটির অনেকেই হয়তো জানেন না এর গুরুত্ব। এটি খুবই ঐতিহাসিক পূণ্যভূমি। গঙ্গার তীরবর্তী এই পানিহাটি অঞ্চলটি প্রাচীনকালের গুরুত্ব ছিল অপরিসীম কারণ সেই সময় প্রধান যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল জলপথ। এই জলপথ দিয়ে সেই সময়কার পণ্য আমদানি রপ্তানি করা হতো, তাই এই অঞ্চলটিকে বলা হতো পণ্যহাটি। কালের অবসানে মানুষের মুখে পণ্য কথাটি অপভ্রংশ হয়ে আজ পানিহাটিতে পরিণত হয়েছে। গঙ্গার তীরবর্তী এই প্রাচীন জন বহুল স্থানটি প্রচুর ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী বহন করে। এখানে শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু নিত্যানন্দ প্রভু, গান্ধিজি, নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর,আচার্য জগদীশচন্দ্র বসুর মতো মনীষীদের পদধূলি দ্বারা পানিহাটি পুণ্যভূমিতে পরিণত হয়েছে। আমরা ভ্রমণ বন্ধুরা প্রথম যে স্থানটি দর্শনের গেছিলাম সেটি হলো শ্রী চৈতন্য মন্দির। এখানে পৃথিবী বিখ্যাত দন্ড মহোৎসব অনুষ্ঠিত হয়, এটি চিড়া দই উৎসব নামেও বিখ্যাত। ৫০৬ বৎসরের উৎসব এটি। প্রতি বৎসর জৈষ্ঠ্যে শুক্লা ত্রয়োদশী তিথিতে এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।এই মন্দিরে শ্রী শ্রী গৌরাঙ্গের চরণ যুগল সংরক্ষিত আছে। এই স্থানে ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ ৩৪ বার ভক্ত, শিষ্যদের নিয়ে এখানে এসেছিলেন। এই মন্দির সংলগ্ন ঘাটে একটি ৭০০ বছর পুরানো বটবৃক্ষ আছে এর তলায় বসেই শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভু শ্রী নিত্যানন্দ মহাপ্রভু লীলা করেছিলেন। এটির পাশেই আছে দন্ড মহোৎসব স্থান মন্দিরটি গঙ্গার তীরবর্তী হওয়ায় প্রাকৃতিক পরিবেশ অতীব মনোরম। আমাদের দ্বিতীয় গন্তব্যস্থান ছিল শ্রী চৈতন্য মন্দিরের বিপরীতে শ্রীগৌরাঙ্গ ঘাট রোডের উপর অবস্থিত বিশিষ্ট ভক্ত শ্রী মণি মাধব সেনের ঠাকুরবাড়ি। এই বাড়িটির নাম গৌরাঙ্গ ধাম। সেনেদের ঠাকুর বাড়ির ভেতরে পূর্বদিকে মন্দির অবস্থিত। মন্দিরে , শ্রীশ্রী লক্ষীনারায়ন, শ্রীশ্রী রাধা কৃষ্ণের, শ্রী গৌরাঙ্গ মহাপ্রভু শ্রী নিত্যানন্দ প্রভুর বিগ্রহ প্রতিষ্ঠিত আছে। এই মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা শ্রদ্ধেয় শ্রী গুরুচরণ সেন মহাশয়। উনি মন্দিরের আদি ঠাকুর রাধাকৃষ্ণ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ঠাকুর শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ, শ্রী চৈতন্য মন্দিরে মন্দির সংলগ্ন দন্ড মহোৎসব তলায় ৩৪ বার এসেছিলেন, তখন শ্রী মনি সেনের বাড়ির একটি কক্ষে বিশ্রাম করতেন, সেই কক্ষটি ঠাকুর শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণের মন্দির করে নিত্যপূজা হয়। এর পরের গন্তব্য ছিল ইস্কন মন্দির, রাঘব পন্ডিতের পাঠভবণ, গোবিন্দ ভবন (পেনেটি বাগানবাড়ি), ত্রান নাথ বাবুর কালি মন্দির, সৎসঙ্গ মন্দির এবং আগরপাড়ার গিরিবালা ঠাকুরবাড়ি যা পরবর্তী পোস্ট প্রকাশ করবো

 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ